ডিজে তান্ডব বন্ধ করতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ

সেখ আব্দুল আজিম, ডানকুনি : ইদানীং হুগলী জেলা জুড়ে মাত্রা ছাড়া হয়ে উঠেছে বাজি ও ডিজের উপদ্রব। যে কোনো ধর্মীয় বা সামাজিক অনুষ্ঠানের অন্যতম অঙ্গ হয়ে উঠছে ঐ উৎকট সংস্কৃতি। অথচ সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী জনস্থানে মাইক বাজাতে হলেও প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে কেবলমাত্র সাউন্ড লিমিটার ব্যবহার করেই তা বাজানো যায়। বাজির ক্ষেত্রেও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী বছরের নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনে নির্দিষ্ট সময় মেনে কেবল মাত্র সবুজ বাজি প্রশাসনের নির্দিষ্ট করা জায়গায় জ্বালানো যায়। কিন্তু বাস্তবে জেলার পুলি কমিশনারেট এলাকা বা গ্রামীণ পুলিশ এলাকার কোথাও সেই সব নিয়ম মানার বালাই থাকেনা। বাজি ও ডিজে বক্স বিরোধী মঞ্চের অভিযোগ বারংবার পুলিশকে জানানোর পরেও পুলিশ সক্রিয় হয় না। ফলে সাধারণ মানুষ ভোগ করছেন নিত্য যন্ত্রণা।

    গত ২১ মে ২০২৫ ডানকুনি থানার মনবেড় এলাকায় রক্ষাকালী পুজোর ভাসান উপলক্ষে ডি জে তান্ডব শুরু হলে অভিযোগ পেয়ে ডানকুনি থানার পুলিশ ডিজে বক্স বন্ধ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়। একাধিক পুলিশকর্মী আহত হন। হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়। এক মহিলা পুলিশ কর্মী গুরুতর আহত হন। পরে ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের আজ শ্রীরামপুর আদালতের বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজত দেন। ধৃতরা হলেন, সৌভিক দাস অমিত ঘোষ কৃষ্ণেন্দু মন্ডল তাপস ঘোষ রূপক মন্ডল ও যুধিষ্ঠির।
    বাজি ও ডিজে বক্স বিরোধী মঞ্চ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গৌতম সরকার বলেন, আইন অনুযায়ী প্রকাশ্যে ডিজে বা জেবিএল বক্স ব্যবহার নিষিদ্ধ। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষ আইনের তোয়াক্কা না করেই শব্দ তান্ডব চালান। পুলিশ সব ক্ষেত্রেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিলে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে না। আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে কঠোর সাজার দাবি জানাচ্ছি। মঞ্চের সহসম্পাদক জয়ন্ত কুমার পাঁজা বলেন, এমনিতেই নানাবিধ দূষণ আমাদের সভ্যতার অঙ্গ হয়ে গেছে, তার উপর শুধু বিকৃত আমোদ করার জন্য দূষণ মেনে নেওয়া যায়না। মানুষের সার্বিক সচেতনতা ও পুলিশ প্রশাসনের সর্বত্র সক্রিয়তা জরুরি। বেআইনি বাজি ও ডিজে বক্স ব্যবহার করলেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি আমরা।
    আশ্রয় হোম এন্ড হসপিটাল ফর এ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মাবুদ আলি বলেন,বাজি ও ডিজে বক্সের কারণে পশুপাখিরা ভীষণ ভাবে বিপর্যস্ত হয়। কয়েদিন আগে একটি হনুমান বাজির ভয়ে গাছের মগডালে উঠে প্রসব করে। ফলে তার তিনটি সন্তানই মারা যায় হনুমানটিও গুরুতর আহত হয় ও পরে মারা যায়।সভ্য সমাজে এসব কাম্য নয়।