|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা, নতুন গতি, বাঁকুড়া : করোনা আবহের মাঝেই আবারো সমাজসেবার কাজে মানবিক মুখ নিয়ে এগিয়ে এলেন অবসর প্রাপ্ত জাতীয় শিক্ষক তারানন্দ চক্রবর্তী।তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত জাতীয় শিক্ষক,তিনি একজন অশীতিপর বৃদ্ধ,করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং তৎপরবর্তী মানুষের দুরবস্থা, তাঁর মত সততার ঘেরাটোপে থাকা সহজ সাধারন জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে, ব্যথিত করেছে তাঁর হৃদয়কে, তাই আবারও দুঃস্থ শিক্ষার্থীদের ও দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এবং সমাজকেও এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখালেন বাঁকুড়ার অবসরপ্রাপ্ত জাতীয় শিক্ষক তারানন্দ চক্রবর্তী। তারানন্দ চক্রবর্তী বাঁকুড়া জেলার তালডাংরা থানার হাড়মাসরা গ্রামের বাসিন্দা।কর্মসূত্রে তিনি ছিলেন বাঁকুড়া জেলার সারেঙ্গা থানার জাম্বনি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিষয়ের শিক্ষক এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক।
রবিবার এই জাম্বনী বিদ্যালয়ের ৫৫ জন দুঃস্থ শিক্ষার্থীদের হাতে খাতা, জামিতি বক্স,ছাতু, দুধ,বিস্কুট, সোয়াবিন, কোলগেট,সাবান, মাস্ক প্রভৃতি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য,কুড়ি জন দুঃস্থ মানুষের হাতে কম্বলের পাশাপাশি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত আচ্ছাদন হীন তিনটি পরিবারের হাতে ত্রিপল তুলে দেওয়া হলো তারানন্দ চক্রবর্তীর পক্ষ থেকে।এই অনুষ্ঠানটিকে সর্বাঙ্গসুন্দর রূপ দেওয়ার জন্য এলাকার ছাত্র-যুব থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা ও উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন তারানন্দবাবুর বিশেষ স্নেহধন্য প্রাক্তন ছাত্র ও এবং জাম্বনী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ প্রধান শিক্ষক মানস কুমার মহান্তি, বাঁকুড়া জেলার সারেঙ্গা প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সাধন মহান্তি, কুসুমটিকরি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার মহান্তি, প্রাক্তন ফুড ইন্সপেক্টর তারাপদ মহান্তি, মলয় মহান্তি এবং তারানন্দবাবুর দুই সন্তান নরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী ও হেরম্ব নাথ চক্রবর্তী এবং আরো অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি বর্গ। উল্লেখ্য সংস্কৃত সাহিত্যের বিশিষ্ট পণ্ডিত তারানন্দ বাবু,তাঁর পাণ্ডিত্যের পুরস্কারস্বরূপ রাজ্য সরকারের কাছে একাধিকবার সম্মানিত হয়েছেন.২০০১ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে নতুন দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে পেয়েছেন জাতীয় শিক্ষকের বিরল সম্মান।২০১৯ সালে কোলকাতা সংস্কৃত কলেজ ও ইউনিভার্সিটি থেকেও পেয়েছেন বিশেষ সাম্মাননা। এই বয়সেও তাঁর লেখনী কিন্তু থেমে নেই।তাঁর লেখনী থেকে সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে তিনি অসংখ্য লেখা লিখেছেন। ভারতীয় সংস্কৃত পণ্ডিত শ্রী অট্টুর বালভট্ট কর্তৃক বিরচিত ” শ্রীরামকৃষ্ণ কর্নামৃতম “গ্রন্থটির বঙ্গানুবাদ করে তারানন্দবাবু লেখক সমাজের কাছে যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছেন। এদিন জাম্বনী উদয় তীর্থ ক্লাবের পক্ষ থেকে সকল প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রনম্য অবসর প্রাপ্ত,জাতীয় শিক্ষক পণ্ডিত তারানন্দ চক্রবর্তী মহোদয়কে পুষ্পস্তবক, সাল ও একটি মানপত্রের মাধ্যমে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। এদিন তারানন্দবাবুর অনুপস্থিতিতে, তাঁর পক্ষে এই সম্মাননা গ্রহন করেন তাঁর পুত্র, শিক্ষক নরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী।