বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছিল ! তার মধ্যেই স্ত্রীকে গুলি করে খুন

নিজস্ব সংবাদদাতা : বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছিল। তার মধ্যেই স্ত্রীকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ডোমজুড়ে। মৃতার নাম অনুশ্রী। এই ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী চন্দন মাজিকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।

    মৃতার পরিবারের অভিযোগ, বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিল অনুশ্রী। ফেরার সময় মাকে ফোনও করে। মাকে জানায় যে, তিনি বাড়ি ফিরছে। কিন্তু তারপর আর বাড়ি ফেরা হয়নি অনুশ্রীর। একসারা রোড থেকে কাপড় দিয়ে চোখ বাঁধা অবস্থায় অনুশ্রীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিস। দেহের পাশে পড়েছিল ভ্যানিটি ব্যাগ। ব্যাগে থাকা আধার কার্ড দেখে নাম পরিচয় জানতে পারে পুলিস। তারপর পুলিসের তরফে পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। অভিযোগ, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর পাশাপাশি গুলিও করা হয়েছে অনুশ্রীকে। কারণ, ময়নাতদন্তের সময় নিহতের মাথাথেকে একটি গুলি বের করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টেও উল্লেখ রয়েছে সেই তথ্যের।

     

    এই ঘটনায় মৃতার বাবার সরাসরি অভিযোগ জামাই চন্দন মাজির বিরুদ্ধে। তিনি জানিয়েছেন, ডোমজুড়ের সলপ হাজরাপাড়ার বাসিন্দা তাঁরা। ওদিকে সলপেরই বটতলা পাড়ার ছেলে চন্দন মাজি। বছর দেড়েক আগে চন্দনের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর মেয়ে অনুশ্রীর। নিজেরাই পছন্দ করে। তারপর বাড়ির সম্মতিতে দুজনে বিয়ে করেন। বাবার অভিযোগ, অনুশ্রী নাচ করতে খুব ভালবাসত। কিন্তু বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে নাচ বন্ধ করার জন্য চাপ দিতে থাকে। এমনকি এই নিয়ে ঝামেলায় গায়ে হাত পর্যন্ত তোলে অনুশ্রীর। শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয় তাঁকে। শেষমেশ পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, মাস ছয়েক আগে বাপের বাড়ি ফেরত চলে আসে অনুশ্রী। স্বামী চন্দন মাজির বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা শুরু করে। সেইসঙ্গে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের চাকরির পাশাপাশি বাচ্চাদের নাচ শেখাতেও শুরু করে অনুশ্রী। পরিবার জানিয়েছে, রবিবার বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছিল অনুশ্রী। তারপর রাত ৮টা নাগাদ একবার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় তার। তখনই মাকে জানায় যে, সে বাড়ি ফিরছে। বাবার দাবি, হয় জামাই চন্দন মাজি নিজেই খুন করেছে তাঁর মেয়েকে। অথবা ভাড়াটে খুনি দিয়ে এই কাজ করিয়েছে।

     

    মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে অনুশ্রীর স্বামী চন্দন মাজিকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিস জানিয়েছে, বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অনুশ্রীর উপর চাপ দিচ্ছিল চন্দন। সেই নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝামেলা ও চলছিল। তারই পরিণতিতে এই খুন হতে পারে!