|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : গরু পাচার কাণ্ডের সিবিআইয়ের অভিযানের জেরে গরুর হাটে ব্যবসায় মন্দা শুরু হয়েছে। পশুহাটে যেমন গরুর আমদানি কমেছে তেমনই ক্রেতাও কমেছে।কেতুগ্রামের পাচুন্দি গ্রামের পশুহাটের মালিক কতৃপক্ষ থেকে সাধারণ ব্যবসায়ী সকলেই গরু কেনা-বেচা করতে আতঙ্কিত। সিবিআইয়ের কারণে ব্যবসায়ীরা পশুহাট এড়িয়ে চলছে। এদিকে পশুহাটগুলিতে নজিরদারি থেকে অভিযান সবই চালাচ্ছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ।তবুও ভিন জেলায় ক্যারিয়ারের হাত ধরে গরু চলে যাচ্ছে।পূর্ব বর্ধমান জেলার সীমান্তবর্তী থানা হল কেতুগ্রাম। বীরভূম,মুর্শিদাবাদ ও নদীয়া জেলার সঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলার সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ ব্যাবসা কেন্দ্র হল কেতুগ্রাম থানা এলাকা। জেলার অন্যতম বড় পশুহাট হল কেতুগ্রামের পাচুন্দি পশুহাট। একসময় পাচুন্দি পশুহাটে কোটি টাকার কাছে বেচা-কেনার নজির আছে। সিবিআই সূত্রের খবর গরু পাচার কাণ্ডের তদন্ত শুরুর সময় থেকেই বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমানের কয়েকটি পশুহাটের উপর ‘রেইকি’ করেছিল সিবিআইয়ের বিশেষ দল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বীরভূমের পশুহাটগুলি ছাড়াও পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের পাচুন্দির পশুহাট। পাচুন্দি পশুহাট থেকে দু’ধরনের পথে গরু পাচার করা হত বলে সিবিআই সূত্রে জানা যায়। একটি হল সড়ক পথ অন্যটি হল নদীপথ। সড়কপথে পাচুন্দি হাট থেকে মুর্শিদাবাদের দূরত্ব মাত্র তিন কিমি। প্রতি বৃহস্পতিবার হাটের দিন গরুগুলো গাড়িতে চাপিয়ে বা হাঁটিয়ে কেতুগ্রামের বন্দর চেকপোস্ট পার করে সোনারুন্দি দিয়ে সালার,কান্দি বহরমপুর দিয়ে জলঙ্গীর কাছে পৌঁছে যেত। অন্য পথটি হল নৌকা করে ভাগীরথী নদী পার করে নদীয়ার হাঁপুকুরিয়া হয়ে বাংলাদেশ।পাচুন্দির হাট থেকে দশ কিমি সড়ক পথে গয়ে কল্যানপুরে ভাগীরথী নদীর ফেরিঘাট,উদ্ধারণপুরের ভাগ্যবন্তপুর ফেরিঘাট, ছেঁড়াখালি ফেরিঘাট দিয়ে অনায়াসে নৌকায় গরু পার করে তিরিশ কিমির মধ্যেই বাংলাদেশ সীমান্ত পৌঁছানো যায়। একসময় দুটো পথেই গরু পাচার হত বলে স্থানীয়রা জানাচ্ছে।এখন গরু গেলেও বাংলাদেশ যাচ্ছে না বলে দাবি করছে গরুর ক্যারিয়াররা। আজই দু’নৌকা গরু পূর্ব বর্ধমান থেকে নদীয়া গেল। ফেরিঘাট কতৃপক্ষ সব জানলেও কিছু বলতে নারাজ।গরুর ক্যারিয়ার দের কাছে নথি পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা গেল ঝাড়খণ্ড- বীরভূমের সীমান্ত এলাকা রাজনগর হাটের পাশ নিয়ে গরুগুলোকে নৌকায় পার করা হচ্ছে।রাজ্যে গরু পাচারকাণ্ডের জেরে পশুহাটে গরুর ব্যবসা লাটে উঠেছে।পাচুন্দির হাটের কর্মী বিশ্বনাথ দে বলেন, একসময় পাচুন্দির পশুহাটে রাতভর বেচা-কেনা চলত। তখন ভিনরাজ্যের গরু এখানে আসত। এখন হিড়িকের জেরে আর কেউ ভয়ে আসছে না। বাইরের রাজ্যের গাড়িও আর গরু নিয়ে হাটে আসে না। সিবিআইয়ের ঘটনার জেরে পশুহাটের ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। মন্দা চলছে। পুলিশি নজিরদারির জন্য অনেকে হাটে গরু কিনতে বা বেচতে আসছে না।গরু পাচার কাণ্ডে রাজ্যে সিবিআইয়ের অভিযানের সঙ্গে পশুহাট গুলিতে রাজ্যের পুলিশি নজিরদারি বেড়েছে। কেতুগ্রাম পুলিশ বন্দরের কাছে মুর্শিদাবাদ সীমান্তে নজরদারি চালালেও কেতুগ্রামের নদীপথে অনায়াসে অন্যজেলার পশুহাটের গরু পাচার হচ্ছে।