বিরোধীদের বাদী ন্যস্ত, পরবর্তী লোকসভা ও বিধানসভা ভোট ইভিএমে হবে জানিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন।

সাইফুদ্দিন মল্লিক, নতুন গতি : ভোট ব্যালটে হবে, নাকি ইভিএমে এই বির্তক কয়েক মাস ধরেই চলছে ভারতের রাজনীতিতে। ভোটাধিকার প্রাপ্ত দেশের প্রতিটি মানুষের চর্চার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ভোটের মাধ্যম নিয়ে। গতকাল ৭ অক্টোবর ব্যালটে নয় – লোকসভার ভোট হবে ইভিএমেই, এই কথা ঘোষনা করলেন নির্বাচন কমিশন। কংগ্রেস, তৃণমূল – কংগ্রেস, আপ সহ বিরোধীদের অধিকাংশের ব্যালটের দাবি খারিজ করে একথা জানিয়ে দিল দেশের নির্বাচন কমিশন।

    সরকারিভাবে ইভিনএমে ভোট করার পক্ষে কয়েকটি যুক্তি বা সুবিধার কথা বলেছেন কমিশন। প্রথম যুক্তি – ইভিএমে বুথ দখল বন্ধ হয়েছে। দ্বিতীয় – এতে গণনাও হয় দ্রুত এবং নিখুঁত। তৃতীয় – ব্যালট পেপারে গণনায় যে গোলমালের সম্ভাবনা ছিল, ইভিএমে ভোট শুরু হওয়ার পর তাও বন্ধ হয়েছে। চতুর্থ – ব্যলটে ভোট হলে ভোট বাতিল হয় বহু, মাঝে মাঝে বাতিল ভোট বিজয়ী প্রার্থীর মার্জিনের থেকে বেশি হয়। ইভিএমে ভোট নিয়ে একটি খুশির বা আশার বানী শুনিয়েছে কমিশন। তাহলো, লোকসভার ভোট হবে ভিভিপ্যাটযুক্ত ইভিএমে। কমিশন জানিয়েছে, ভিভিপ্যাটের স্লিপ পাঁচ বছর পর্যন্ত অক্ষত থাকে। তাই ভোট গণনা নিয়ে কোথাও কোনও মামলা হলে আদালতে সেই ভিভিপ্যাট পেশ করা যাবে। উক্ত সমস্ত কিছু বিবেচনা করে কমিশন বলেন, আগামী পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা এবং লোকসভার ভোটও হবে ইভিএমেই।’ এবং একইসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ডিসেম্বরে ভোটের জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে কমিশন এদিন জানিয়ে দিয়েছে ভোট হবে ২০১৯ সালে।

    লোকসভা ভোট নিয়ে আলোচনা করতে গত ২৭ আগস্ট দিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল নির্বাচন কমিশন। সেখানে আপাল, তৃণমূল, জেডিইউ, কংগ্রেস সহ বিরোধীদের অধিকাংশের দাবি ছিল, ফের ব্যালট পেপারে ভোটপ্রক্রিয়া ফেরানোর। তাদের অভিযোগ ছিল, ইভিএমে কারচুপি হচ্ছে। আর কারচুপি করেই বিজেপি জিতছে। তাই ‌ইভিএম বাতিল করে ফের আগের মতো পেপার ব্যালটে ভোট হোক। কিন্তু রবিবার কমিশন কারচুপির অভিযোগ খারিজ করে বলে, ইভিএমে ভোটের ফলে বুথ দখল, ছাপ্পা ভোট বন্ধ হয়েছে। দ্রুত এবং নিখুঁত গণনা সম্ভব হয়েছে। কমিশন এদিন স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ব্যালট পেপারে যখন ভোট হতো, তখন প্রায় প্রতি বিধানসভা এলাকায় বহু ভোট বাতিল হতো। অকেজো (ইনভ্যালিড) ভোট পড়ত। সরকারি বিবৃতিতে কমিশন এও জানিয়েছে, ব্যালট পেপারে ভোটের যুগে অনেক সময় গণনা করতে গিয়ে এমনও দেখা গিয়েছে যে, বাতিল ভোটের সংখ্যা বিজয়ী প্রার্থীর ভোটের মার্জিনের চেয়েও বেশি। তাই যাবতীয় গোলমাল এড়াতে ইভিএমে ভোটের পক্ষেই সওয়াল করে কমিশন বলেছে।