সাপে কাটা কিশোরীকে চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে গিয়ে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়ে ঝাড়ফুঁক করা অভিযোগ উঠল পরিবারের বিরুদ্ধে

নিজস্ব সংবাদদাতা : কুসংস্কারের জর্জরিত এখনো মালদা জেলার গ্রামীণ এলাকা। এখনো জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা গুলিতে ওঝা গুনির উপর আস্থা সস্থানীয়দের। তারি এক জলজ্যান্ত প্রমাণ মিলল মালদার গাজোল ব্লকের এক আদিবাসী গ্রামে। সাপে কাটা কিশোরীকে চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে গিয়ে ওঝার কাছে নিয়ে গেল পরিবারের লোকেরা।‌ যদিও সর্প প্রেমীদের তৎপরতায় কুসংস্কারের বলির হাট থেকে রক্ষা পেল ওই কিশোরী। বিষধর সাপের কামড়ে গুরুতর অসুস্থ কিশোরীকে চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে গিয়ে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়ে ঝাড়ফুঁক করা অভিযোগ উঠল পরিবারের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে ওঝার বাড়ি পৌছায় বেশ কয়েকজন সর্প প্রেমী। প্রথমদিকে সর্প প্রেমীদের ওই কিশোরীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে বাধা দেয় পরিবারের লোকেরা। পরে পুলিশের সাহায্যে গুরুতর অসুস্থ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকালে পুরাতন মালদা থানার নেমুয়া এলাকায় এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পুলিশ অভিযুক্ত ওঝাকে আটক করেছে।আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই কিশোরী বর্তমানে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে মালদা গাজোল থানার শালবনি গ্রামের বাসিন্দা মন্ডল মুর্মুর মেয়ে সুমি মুর্মুকে শুক্রবার রাতে বিষধর সাপে কামড়ায়। সুমি গাজোল হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। সাপে কামড়ানোর পর পরিবারের লোকেরা তৈরি করে থাকে হাতিমারি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। তবে পরিবারের লোকেরা হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে রাতেই পুরাতন মালদার নেমুয়া গ্রামে তাদের এক আত্মীয়ের কাছে নিয়ে যায়। সকাল থেকে সাপে বিষ নামানোর জন্য চলছিল ঝাড়ফুঁকের প্রস্তুতি। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এলাকার বেশ কয়েকজন সর্প প্রেমী। পরিবারের লোকেদের বুঝিয়ে কিশোরীকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে পরিবারের লোকেরা তাতে রাজি হয়নি। বাধ্য হয়ে সর্ব প্রেমীরা মালদা থানায় খবর দেয়। পুলিশ এসে অসুস্থ কিশোরীকে উদ্ধার করে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসা চলছে তার।বিষয়টি জানতে পেরে তড়িঘড়ি এলাকায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের মালদা শাখা। বিজ্ঞান মঞ্চের মালদা শাখার কর্মীরা বলেন, মালদা জেলার এখনও বেশ কিছু গ্রামীণ এলাকায় কুসংস্কার ডাইনি প্রথা চালু রয়েছে। আমরা বারবার ওই সমস্ত এলাকায় মানুষকে সচেতন করার কাজ করে আসছি। তারপরও কিছু মানুষের মধ্যে গোঁড়ামি থেকেই যাচ্ছে। যে গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে আমরা সেখানে গিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পরিকল্পনা নিয়েছি।