ফণী ঝড়ে গৃহহীন বিধবা মহিলা, নাম নেই বাংলা আবাস যোজনায়

সংবাদদাতা : আজিজুর রহমান, গলসি, মাথা গোঁজার একমাত্র আশ্রয়স্থল ভেঙে গেছে ২০১৯ সালের ফণী ঝড়ে। পাঁচ বছর ধরে গৃহহীন অবস্থায় রয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের পারাজ গ্রামের পাল পাড়ার বাসিন্দা কৃষ্ণা পাল। নিজের গ্রাম ছেড়ে ভীন গ্রামে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। বারবার পঞ্চায়েতে গেছেন, সরকারি ঘরের জন্য আবেদনও করেছেন বিডিও অফিসে। কিন্তু পাঁচ বছর পার হলেও বাংলা আবাস যোজনার তালিকায় তার নাম নেই। স্বামীর মৃত্যুর পর ভিটে ছেড়ে যেতে মন চাইলেও শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়েছে। একটি বাড়ির আশায় দিন গুনছেন এই অসহায় বিধবা মহিলা।

    স্থানীয় বাসিন্দা পিন্টু আচার্য্য জানান, কৃষ্ণা পালের স্বামী সত্যনারায়ণ পাল ২০০৮ সালে মারা যান। জমিজমা বলতে তেমন কিছু নেই, স্বামীর হাতে তৈরি মাটির বাড়িটিই ছিল তার শেষ সম্বল। কিন্তু ফণীর তাণ্ডবে সেই বাড়ি ভেঙে পড়ে। বর্তমানে তিনি গৃহহীন।

    পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সাজাহান সেখের বক্তব্য, “উনি সত্যিই অসহায়। সরকারি ঘর পাবার যোগ্য। ২০১৮ সালের আবাস প্লাসে তার নাম ছিল না। ফণী ঝড়ের পর তার বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে বিডিও অফিসে তার নাম পাঠিয়েছিলাম।”

    এদিকে, সোমবার এক বৈঠকে বাংলা আবাস যোজনা থেকে বাদ পড়া নামগুলিকে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। কৃষ্ণা পালের বিষয়টি জানানো হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি একদম উচিত হয়নি। আমি বলবো মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানান। সেই চিঠির একটি কপি যেন আমাকে দেন। আমি দ্রুত ব্যবস্থা নেব।”

    কৃষ্ণা দেবী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “খবর পেয়ে পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সাজাহান শেখ আমার বাড়িতে এসেছিলেন এবং বিষয়টি বিডিও অফিসে জানিয়েছিলেন। এরপর আমাকে বিডিও অফিসে ডাকা হয়েছিল। পাঁচ বছর হয়ে গেলেও আমি এখনও সরকারি প্রকল্পের ঘর পাইনি। কয়েক মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর ঘোষণার পর আমি আশা করেছিলাম। কিন্তু বর্তমান বাংলা আবাস যোজনার তালিকায় আমার নাম নেই।”

    কৃষ্ণা দেবীর জামাই সিন্থল হাজরা বলেন, “ঘর ভেঙে পড়ার পর শাশুড়ি পাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। খবর পেয়ে আমি তাকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি।”

    পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সেখ মিরাজ জানান, “খবর পেয়েছি এলাকার কিছু নাম তালিকায় আসেনি। বিষয়টি বিডিও সাহেবকে জানাবো।”জেলা শাসক আয়েশা রানী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে গলসি ১ বিডিওর কাছ থেকে বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”