মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মুক বধির সম্পন্ন যমজ দুই বোনকে সংবর্ধনা বীরভূমে

সেখ রিয়াজুদ্দিন, বীরভূম:- ইচ্ছে,জেদ আর অধ্যবসায় থাকলে প্রতিকুল অবস্থাতে ও ফল করা যায়- যেটা করে দেখিয়েছে এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মুক বধির সম্পন্ন যমজ দুই বোন রুমি এবং সুমি।সম্প্রতি ২০২২ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। রাজ্যে, জেলায় বা বিদ্যালয় ভিত্তিক কে কোথায় কি স্থান দখল করেছে সেদিকে নজর থাকে সবার। সংবাদ মাধ্যমে ও দেখা যায় তাদের সাক্ষাৎকারে উঠে আসে ভালো ফলাফলের পিছনে কার অবদান, কতক্ষণ পড়াশোনা সময়, ভবিষ্যতে কি হতে চাও ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্নত্তোর পর্ব। কিন্তু যাদের কথা বা জীবন সংগ্রামের কথা সচরাচর ওঠে আসেনা , অনেকাংশে মেধা তালিকা সম্পন্ন পড়ুয়াদের খোঁজ করতে করতে তারা ভীড়ের চাপে অতলে তলিয়ে যায়। সেই সংগ্রামী মুখ বধির সম্পন্ন যমজ দুই বোন রুমি খাতুন ও সুমি খাতুন এবছর নলহাটি ব্লক এলাকার লোহাপুর চারুবালা বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করে জেলায় নজর কেড়েছে।

    নম্বরের ভিত্তিতে তাদের আহামরি কিম্বা বাহাবা প্রাপ্য নাজুটলেও তাদের কঠিন সংগ্রামের মধ্যে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়াটাই বড় সাফল্য বলে এলাকাবাসীর অভিমত। পরিচয়ে জানা যায় বীরভূম জেলার নলহাটি দুই নম্বর ব্লকের বারা গ্রামের সামিরুদ্দিন ও রেকিবা বিবির তিন কন্যা এবং এক পুত্র নিয়ে সংসার।এরমধ্যে রুমি ও সুমি মুক বধির সম্পন্ন যমজ দুই বোন । মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর রুমি খাতুনের ৩৫৩ এবং সুমি খাতুনের ৩৯৫ ।মুক বধির পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ স্কুল বা শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও সেই সুযোগ তারা পেয়ে ওঠেনি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় সেই সুযোগ কিছুটা পাওয়া যায়, পরবর্তীতে তার মা বাবা বাড়িতেই তাদের সহযোগিতা করে এসেছেন। যদিও মুক বধির পড়ুয়াদের পড়ানোর কৌশল ভাবভঙ্গির মাধ্যমে বলে জানা যায়। এরকম পরিবেশ পরিস্থিতিতে উত্তীর্ণ হওয়াটাই কঠিন, তাস্বত্ত্বেও তাদের উত্তীর্ণ হওয়াটাই এখন সবার কাছে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূম জেলা শাসক বিধান রায়, রামপুরহাট মহকুমা শাসক সাদ্দাম নাভাস মাধ্যমিক উত্তীর্ণের জন্য মুক বধির যমজ দুই বোনকে সংবর্ধনা প্রদান করেন রামপুরহাট মহকুমা অফিসে। অন্যদিকে এক অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর বীরভূম জেলা কমিটির উদ্যোগে ও মুক বধির সম্পন্ন যমজ দুই বোনকে পুষ্পস্তবক, মিষ্টি সহ উপহার সামগ্রী দিয়ে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের পক্ষে জেলা সম্পাদক বদরুদ্দোজা সেখ, জেলা কমিটির সদস্য রাজেন প্রামানিক, সুমন সেখ, আমিনা খাতুন প্রমুখ সদস্যবৃন্দ। এদের কন্ঠেই উচ্চারিত হতে পারে —আমরা পারি, কি পারিনা? আমরা আকাশে উড়তে পারি, পাহাড়ে চড়তে পারি….. ।