জেনে নিন শাহরুখ পুত্র “আরিয়ান খান জামিন না পাওয়ার কারণ

নতুন গতি, ওয়েব ডেস্ক : জামিন এবং জেল ভারতীয় দণ্ডবিধিতে দুইয়েরই উল্লেখ রয়েছে। আইন অনুযায়ী ১৯৭০ এর সংবিধানের ২১ নং অনুচ্ছেদের মাধ্যমে কার্যকর করা যায়। ফৌজদারী কার্যবিধির (CrPC) ৪৩৯ ধারা অনুযায়ী সেই অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জামিন দেওয়ার জন্য আদালতকে ক্ষমতা প্রদান করে। এই এক্ষেত্রে যুক্ত হয়েছে মাদক বিরোধী আইনের নিয়ম।

     

    মাদক-সংক্রান্ত মামলাগুলি নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সস (এনডিপিএস) আইন, ১৯৮৫ এর অধীনে রয়েছে মামলাটি। আইনটি এনডিপিএস আইনের অধীনে তালিকাভুক্ত মাদকদ্রব্য এবং সাইকোট্রপিক পদার্থের চাষ, ব্যবহার, হ্রাস, বিক্রয় বা লেনদেনকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে। আরিয়ান খান-কে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু কেন জামিন পাচ্ছেন না তিনি?

     

    এনডিপিএস আইনের ৩৭ ধারা অনুযায়ী মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়া একজন আসামিকে জামিন দেওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে যে, এই আইনের অধীনে দণ্ডনীয় অপরাধের জন্য অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি “প্রথমত, জামিনে বা তার নিজের বন্ডে মুক্তি পাবে যদি পাবলিক প্রসিকিউটর এই ধরনের মুক্তির আবেদনের বিরোধিতা না করে, দ্বিতীয়ত, যেখানে পাবলিক প্রসিকিউটর আবেদনের বিরোধিতা করেন এবং আদালত সন্তুষ্ট হয় যে সেই আবেদনের যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে। সেক্ষেত্রে আদালত যদি মনে করে অভিযুক্ত এই ধরনের অপরাধের জন্য দোষী নন এবং জামিনে থাকাকালীন কোন অপরাধ করার সম্ভাবনা নেই সেক্ষেত্রে মুক্তি দেওয়া হয়।

     

    সোজা ভাষায় বলতে গেলে, মুম্বাই ক্রুজ ড্রাগস মামলায় পুলিস বা নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) যদি আদালতকে বলে যে জামিন দেওয়া হলে মামলার তদন্ত বাধা পাবে সেক্ষেত্রে জামিন পাওয়া কঠিন। কারন আইনানুসারে অভিযুক্তকে নির্দোষ প্রমাণ করা অভিযুক্তেরই দায়িত্বের মধ্যে পড়বে। এমনটাই ঘটেছে মুম্বাইয়ের মাদক মামলায়। যেখানে শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান সহ ২০ জনকে ৩ অক্টোবর থেকে জেল হেফাজতে রাখা হয়েছে, মিলছে না জামিনও।

     

    চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর এনডিপিএস আইনের অধীনে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বাতিল করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে বলা হয়েছিল জামিনের জন্য ওই ব্যক্তি নিজেকে সম্পূর্ণ দোষী নন, তা প্রমাণ করতে পারেননি। যুক্তিসঙ্গত ভিত্তিরও অভাব ছিল। এক্ষেত্রে আরিয়ান খানের আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন যে শাহরুখ-পুত্রের কাছ থেকে মাদক পাওয়া যায়নি। আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় উত্তরপ্রদেশের ওই অভিযুক্তও আদালতকে জানিয়েছিলেন তার শরীরে কোনও অবৈধ জিনিস পাওয়া যায়নি।

     

    দেখা যাচ্ছে আইনি জটের থেকেও জামিন জটে ফেঁসেছেন আরিয়ান। তাঁকে জামিন পেতে গেলে এখন আদালতের কাছে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি ‘অপরাধপ্রবণ মানসিকতার’ ব্যক্তি নন এবং এই ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনওভাবেই জড়িত নন। ওয়াকিবহাল মহলের মত প্রাথমিক শর্ত পূরণ করতে পারলেও এনসিবি অফিসাররা যেভাবে তাঁকে আটক করেছে সেখানে দ্বিতীয় শর্ত পূরণ করে জামিন পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে আরিয়ান খানের জন্য।