দীপঙ্করের জালে ওঠে রঙিন পাখনাওয়ালা মাছ! তিনি জানান এই বিরল প্রজাতির মাছ সবাইকে দেখাতেই বাজারে এনেছেন বিক্রি করতে নয়

নিজস্ব সংবাদদাতা : জালে রঙিন পাখনাওয়ালা মাছ! নাকাশিপাড়ার বেথুয়াডহরির বাজারে শোরগোল। আর পাঁচটা দিনের মতোই গঙ্গায় জাল ফেলেছিলেন দীপঙ্কর রাজবংশী। কিন্তু জাল বেছে দেখার সময়ই চক্ষু চড়কগাছ। দেখতে অবিকল কাতলার মতো হলেও মাছের বড় বড় রঙিন পাখনা দেখে কিছুটা ভয়ই পেয়ে যান তিনি। যদিও ভয়ের রেশ কাটিয়ে জালে ওঠা বিরল প্রজাতির মাছের সঙ্গে সকলের পরিচয় করিয়ে দিয়ে নিয়ে আসেন বেথুয়াডহরির বাজারেআর রঙিন পাখনাওয়ালা যে মাছ  দেখতে জমে যায় ভিড়। বেশ কয়েকজন উৎসাহী মাছের দরদাম করতে এগিয়েছিলেন। তবে তাঁদের মুখের ওপর দীপঙ্কর সাফ জানিয়ে দেন, বিক্রি করতে নয়। এই বিরল প্রজাতির মাছ সবাইকে দেখাতেই বাজারে এনেছেন। যেখানে জাল ফেলে মাছটি পেয়েছিলেন, সেই পাটুলি গঙ্গাতেই মাছটিকে ফের ছেড়ে দেবেন বলেই জানান জেলে।দীপঙ্কর রাজবংশী জানিয়েছেন, পাটুলি গঙ্গাতে রোজই মাছ ধরতে যান তিনি। সেখান থেকে উঠে আসা রুই-কাতলা নিয়ে হাজির হন নদিয়ার নাকাশিপাড়ার বেথুয়াডহরির বাজারে। দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে তাঁর এই কাজের অভ্যাস। কিন্তু এর আগে কখনও এরকম শঙ্কর প্রজাতির মাছ তথা বিরলমাছ তিনি দেখেননি বলেই জানিয়েছেন। জালে কী মাছ পড়েছে, দেখতে গিয়ে একটা একটা করে মাছ যখন দীপঙ্কর রাজবংশী বাছছিলেন, তখনই তাঁর নজর পড়ে এই বিশেষ মাছটির দিকে।মাছটি দেখতে অবিকল কাতলা মাছের মতোই। কিন্তু এক্ষেত্রে বিশেষত্ব হচ্ছে, মাছটির বড় বড় পাখনা রয়েছে। যা বেশ বড় ধরনেরই। বাজারে মাছ রাখার সাধারণ পাত্রগুলির একটি কার্যত ভরে গিয়েছিল সেই বড় পাখনার বহরে। বড় পাখনাই শুধু নয়, সেগুলিতে অল্প রঙের ছটারও দেখা মিলেছে। প্রথমে মাছটিকে দেখে কিছুটা শঙ্কিত হলেও দীপঙ্করের ভয় কেটে যেতে বেশি সময় লাগেনি।জালে ওঠা বিরল প্রজাতির মাছটির সঙ্গে এলাকার স্থানীয়দের পরিচয় করিয়ে দেবেন, তথা তাঁদেরকে এমন অদ্ভুত-সুন্দর দর্শন মাছ দেখার সুযোগ করে দেবেন স্থির করেই মাছটিকে বাজারে নিয়ে আসেন পেশায় জেলে দীপঙ্কর রাজবংশী। আর তাঁর ভাবনামতোই বিরল প্রজাতির মাছটি দেখতে বেথুয়াডহরির বাজারে জমে যায় ভিড়। লোকমুখে রঙিন পাখনাওয়ালা মাছের কথা ছড়িয়ে পড়তেই অফিসের তাড়া একটু সরিয়ে মাছ দেখতে বাজারে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। অবাক বিস্ময়ে মাছটিকে ভাল করে খুঁটিয়ে দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি কেউই। কেউ কেউ আবার মাছটিকে কেনার জন্য বাড়তি টাকা দেওয়ার কথা জানান দীপঙ্করকে। যদিও সেই পথে হাঁটতে রাজি হননি তিনি। এরকম অদ্ভুত-সুদর্শনকে মাছকে বিক্রি নয়, বরং যেখান থেকে পেয়েছেন, সেই পাটুলি গঙ্গার জলেই ফের ভাসিয়ে দেবেন বলে ঠিক করেছেন তিনি।