|
---|
নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: দেশজুড়ে ঘৃণা-প্রচারণার শিকার হচ্ছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। ভারতীয় সেনাবাহিনীতেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে। মুসলিম সৈন্যদের বিরুদ্ধে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে। সেইসব খবরে অভিযোগ তােলা হচ্ছে, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় ‘মুসলিম রেজিমেন্ট’ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়তে অস্বীকার করে। মুসলিম জওয়ানদের বিরুদ্ধে এই সম্পূর্ণ ভুয়ো অভিযোগের বিরুদ্ধে একশো কুড়ি জনের অধিক প্রাক্তন মিলিটারি অফিসার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কােবিন্দের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন এবং অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। যারা এই মিথ্যা ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন প্রাক্তন সেনা অফিসাররা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সশস্ত্রবাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার ভারতের রাষ্ট্রপতি।
একটি খােলা চিঠিতে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে প্রাক্তন আর্মি অফিসাররা লিখেছেন, ‘মুসলিম রেজিমেন্ট’ কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ ১৯৬৫ সালে কিংবা এখনও ভারতীয় আর্মিতে মুসলিম রেজিমেন্ট বলে কিছু নেই। দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেই অনেকে সেনাবাহিনীতে যােগদান করেন। হিন্দু-মুসলিম-শিখ, যিনিই সেনাবাহিনীতে আসুক না কেন, দেশের প্রতি তার চূড়ান্ত দায়বদ্ধতা থাকে। যুদ্ধের সময় কেউ পিছপা হন না। সবাই বুক চিতিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করেন, সে পাকিস্তান হােক কিংবা চিন।
কােয়ার্টার মাস্টার হাবিলদার আবদুল হামিদ মরণোত্তর পরমবীর চক্র পেয়েছেন। তার সাহস এবং শৗের্য প্রদর্শনের জন্য ১৯৬৫ সালের ইন্দোপাকিস্তান যুদ্ধে। ১৯৬৫-র যুদ্ধে মেজর জেনারেল মুহাম্মদ জাকি ও মেজর আবদুল রাফে খান বীরচক্র সম্মানে ভূষিত হন। আবদুল রাফের নিজের চাচা মেজর জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হয়ে লড়ছিলেন। নিজের চাচার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছেন আবদুল রাফে এবং সাহসের সঙ্গে লড়াই করেছেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে তিনি এখন কিংবদন্তি।
এই চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে ব্রিগেডিয়ার ওসমানের নাম। মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে যােগ দেওয়ার আহ্বান জানালেও তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। কাশ্মীরে আক্রমণকালে ১৯৪৮ সালে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং শহিদ হন। দিল্লির জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়া ক্যাম্পাসে তাকে দাফন করা হয়েছিল। তিনিও মরণোত্তর মহাবীরচক্র সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।