জীবন্ত সাপ কে ঘিরে বাড়ছে ধর্মীয় উন্মাদনা শুরু হয়েছে মনসা পূজো। হাজার হাজার মানুষের ভিড়  বাঙ্গীটোলার সকুল্লাপুর

মালদা: মালদা গ্রামে দেখা দিয়েছে জীবন্ত সাপ ! প্রতিদিন নিয়ম করে আসছে সেই  সাপ । সেই জীবন্ত সাপ কে মা মনসা দেবী রূপে এলাকায় বাড়ছে ধর্মীয় উন্মাদনা। জীবন্ত সাপটিকে দেখে স্থানীয় মানুষ শুরু করেছে মানষা পূজা। আশেপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রতিদিন জড়ো হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। দুধ জল আলতা সিঁদুর পূজা করছে সেই জীবন্ত মনষাকে।

    কালিয়াচক 2 নম্বর ব্লকের বাঙ্গিটোলা অঞ্চলের সুকুল্যাপুর গ্রামে এই জীবন্ত সাপ কে ঘিরে বাড়ছে হাজার হাজার মানুষের জনসমাগম। বাড়ছে ধর্মীয় উন্মাদনা। প্রস্তুতি শুরু হয়েছে নতুন মা মনসা মন্দির তৈরীর।স্থানীয় সকুল্লাপুর মনষা মা মনসা মন্দির কমিটি র সদস্যরা জায়গাটি বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিয়েছে। এলাকাটিতে বসানো হয়েছে লাল কাপড় ও সোলার সাপ। দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন মানুষের জীবন্ত সাপ কে দেখতে আসছে মনসা ভক্তরা। ‌আলতা সিঁদুর টাকা ও দুধ দিচ্ছে মা মনসা কে। স্থানীয় মা মনসা মন্দির কমিটি এই সাপটিকে ঘিরে শুরু করেছে নিজস্ব ব্যবসা। কমিটির সদস্য সুদর্শন চৌধুরীকে স্পষ্ট বক্তব্য সাপ পুজোকে কেন্দ্র করে যে টাকা উঠছে তা কারও ব্যক্তিগত নয়। প্রতিদিনের টাকা জমা হচ্ছে মা মনষা মন্দির কমিটিতে। সেই টাকা দিয়ে আমরা আগামী দিনে মনসা পূজো ও মনসা মন্দির তৈরি হবে।

    স্থানীয় বাসিন্দা ও মনসা মন্দির পূজা কমিটির পূজারী বিষয় কর্মকার জানিয়েছেন “বিগত এক সপ্তাহ থেকে এই সাপটি আমাদের গ্রামের সকুল্লাপুর স্ট্যান্ডের পাশে একটি জায়গাতে আসছে। প্রতিদিন সকাল এগারোটার দিকে আসে । এবং দুপুরের দিকে চলে যায়। সাপকে সাক্ষাৎ মা মনসা। গ্রামের ভিতরে যে মা মনসা মন্দির আছে সেখান থেকে এসেছে। প্রতিদিন গোটা কালিয়াচক 2 নম্বর ব্লক থেকে হাজার হাজার মানুষ আছে এই সাপটিকে পুজো করে যাচ্ছে টাকা দিচ্ছে। আমরা সেই টাকাটি স্থানীয় মনসা মন্দির পুজো কমিটিতে রাখছি। এই টাকা দিয়ে আগামী দিনে মন্দির স্থাপন করা হবে।”স্থানীয় মানুষের এই সাপটিকে ঘিরে ধর্মীয় ভাবাবেগে তৈরি হলেও  করোনা আবহে এই সাপকে কেন্দ্র করে বাড়ছে ভিড়। সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়াবার সম্ভাবনা বাড়ছে।  স্থানীয় মানুষ সাপটিকে বনদপ্তর এর হাতে তুলে দিতে না চাইলেও ও মালদা জেলার বিশিষ্ট সর্প বিশেষজ্ঞ নিতাই হালদার স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি এই সাপটিকে দেখেছেন। সাপটি সম্ভবত দোহোসলা বা গহূমা প্রজাতির। সাপটি বয়স্ক ও অসুস্থ। তাই খুব শীঘ্রই সাপটি বনদপ্তর এর হাতে তুলে না দিলে এবং চিকিৎসা না হলে সাপটি মারা যেতে পারে।”বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক সুনীল দাস জানিয়েছেন , “সাপটি অসুস্থ এবং বয়স্ক। সাপ দুধ খায় না। সকল লাভপুরে সাপটিকে নিয়ে বুজরুকি শুরু হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কিছু দিনের মধ্যেই সর্প বিশেষজ্ঞ ও বনদপ্তর কে নিয়ে  গ্রামে গিয়ে গ্রামবাসীদের বোঝাবো। সাপটিকে উদ্ধার করে বনদপ্তর এর হাতে তুলে দেবো। আসলে করণা আবহে মানুষের হাতে কাজ ও টাকা না থাকায় সাপকে  ঘিরে পয়সা রোজগারের ধান্দা করেছিল মানুষ।”বনদপ্তর এর কালিয়াচক জোনের রেঞ্জ অফিসার ইন্দ্রজিৎ মন্ডল জানিয়েছেন , “সবথেকে উপরে বনদপ্তরের নজর রয়েছে.. ওই গ্রামে আমাদের বনদপ্তর এর কর্মীরা আছেন। যেহেতু সাপটিকে ঘিরে ধর্মীয় উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমরাও চাইছি গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে সব থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।”সর্প বিশেষজ্ঞ নিতাই হালদার ঘটনাস্থলে গেলে ক্ষমাশীলতা কে শাপোদ্ধার করতে বাধা দেয়। নিতাইবাবু গ্রামবাসীদের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতন করেন।