ভাঙ্গা ঘরে যেন চাঁদের আলো।

রাজু আনসারী, অরঙ্গাবাদ : ভাঙ্গা ঘরে যেন চাঁদের আলো। অর্থের অভাবে বাইরে পড়াশুনা করতে যেতে না পারলেও দারিদ্র্যতার সংসারে বাড়িতে বসে অনলাইনে কোচিং নিয়ে পড়াশুনা করেই জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা তথা WBJEE পরীক্ষায় বাজিমাত মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের নতুন লোহরপুর গ্রামের ছাত্র জায়েদ আনসারীর। সম্প্রতি প্রকাশিত WBJEE পরীক্ষার ফলাফলে ৬৬০ র‍্যাঙ্ক করেছেন ওই ছাত্র। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে একটি ঘরের মধ্যেই বসবাস করে বাড়ির সকলের সঙ্গে থেকে পড়াশুনা করেই চমকপ্রদ সাফল্য এসেছে জায়েদের।

    সামশেরগঞ্জের নতুন লোহরপুর গ্রামের আজাদ হোসেন ও মুনিরা বিবির এক মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে বড় জায়েদ আনসারী। বাবা পেশায় একটি কাপড়ের দোকানের কর্মচারী। মা বিড়ি শ্রমিক। সামান্য টাকায় সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয় বাবা আজাদ হোসেনকে। বাড়িতে একটি মাত্র ঘর। তাও আবার টালির। ছোট্ট বারান্দার মধ্যেই রান্না বান্না। বর্ষার দিনে চরম কষ্টে দিন গুজরান করতে হয় তাদের। রাতে বৃষ্টির জলে ভিজে যায় ঘড়। তিন ছেলে মেয়েকে নিয়ে এভাবেই কষ্ট করে জীবন যাপন করতে হয়। এরই মাঝে সামশেরগঞ্জের চাচন্ড বি জে হাইস্কুল থেকেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে জায়েদ আনসারী। তারপরেই শুরু জয়েন্ট এন্টার্সের প্রস্তুতি। বেশ কিছুদিন বাড়ি থেকে প্রস্তুতি নিলেও সমস্যা হওয়ায় জঙ্গিপুরের মামার বাড়ি ছুটে যায় জায়েদ। সেখান থেকে কিছুদিন পড়াশুনা করেই পরীক্ষায় বসে সে। তাতেই কার্যত বাজিমাত করে জায়েদ আনসারী। ফলাফলে ৯৩.৯১৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে ৬৬০ র‍্যাঙ্ক করেছে জায়েদ।

    এদিকে এত সুন্দর রেজাল্ট হওয়ার পরেও পড়াশুনা নিয়ে অনিশ্চিত অবস্থা তৈরি হয়েছে জায়েদ আনসারীর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি সেক্টরে ভর্তি হতে চাইলেও আর্থিক অনটনে কোন দিকে এগোবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা। ছেলের রেজাল্ট নিয়ে সাময়িক উচ্ছসিত হলেও কিভাবে তাদের এই মেধাবী ছাত্রের পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন বাবা-মা তার চিন্তাই ঘুম বন্ধ হয়েছে তাদের।