|
---|
আজিজুর রহমান : গলসির রামগোপালপুরের এক হিন্দু অসহায় অন্ধ বৃদ্ধর পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন ফজিলা বেগম। আর এর জেরে আবারও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবি ফুটে উঠল এলাকায়। রবিবার অন্ধ ভোঁদা বাউরিকে সাথে নিয়ে গলসি ১পঞ্চায়েত সমিতি পূর্ত ও পরিবহন কর্মাধ্যক্ষা ফজিলা বেগমের বাড়িতে যান তার স্ত্রী শোভা বাউরি। তখন বাড়িতে ছিলেন ফজিলার স্বামী জাহির আব্বাস মন্ডল। তিনি তাদের চোখের জল দেখে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এরপরই তাদের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী ও জামাকাপড় নিয়ে পৌছে যান গলসি ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত ও পরিবহন কর্মাধ্যক্ষা ফজিলা বেগম। মানুষের চোখের জল মোছার এমন কাজের প্রশংসা করেছেন স্থানীয়রা। ফজিলার স্বামী জাহির আব্বাস বলেন, “যতটা পারি মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি” ওরা স্বামী স্ত্রী এসে তাদের কাছে দুমুঠো খাবারের আবেদন করেছিলেন। চোখের জলের কোন রং হয়না আর ক্ষুধার কোন ধর্ম হয় না। তাই দ্রুত পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন তারা। শোভা বাউরি জানিয়েছেন, তাদের দুইবেলা পেটপুরে খাবার জোটে না। কোন রকম একবেলা খেয়ে দিনযাপন করেন। ফজিলা তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তাদের দুঃখ কিছুটা হলে কমবে। তিনি বয়স জনিত কারনে আর খাটতে পারেননা। তার স্বামী অন্ধ ফলে পরিবারে দুবেলা খাবার জোটেনা। দুএকদিন না খেয়েও তাদের দিনযাপন করতে হয়। এরপর পাড়ার এক মহিলা তাদের ফজিলার কাছে যেতে বলেন। তারপরই তিনি তার অন্ধ স্বামীকে নিয়ে ফজিলার বাড়ি রাইপুর গ্রামে যান। তারপরই চাল, ডাল, আনাজপাতি ও জামা কাপড় দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ফজিলা বেগম। তিনি বলেন, ফজিলার দেওয়া খাবারে তাদের দুমাস চলে যাবে। এদিকে ফজিলা বেগম জানিয়েছেন, কয়েকদিনের জন্য নয় আমি ওই দম্পতির আমৃত্যু খাবারের দায়িত্ব নিয়েছি। উপরওয়ালা বাঁচিয়ে রাখলে আমি ওদের দুমুঠো খাবার দেবো। এর সাথে সাথে স্কুলের মিডডে মিল থেকে ওদের একবেলা খাবারের ব্যবস্থা করেছি। আর এক বেলা ও সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে আমি ওদের খাদ্যসামগ্রী পাঠিয়ে দেব। তাছাড়াও সরকারী ভাবে উনারা যাতে বৃদ্ধভাতা পান তার জন্য ভাতার ফর্ম ফিলাপ করছি। স্থানীয় বাসিন্দা দেবব্রত ঘোষ বলেন, ফজিলা বেগম সবসময় এমন কাজ করে থাকেন। তাদের এলাকায় ফজিলা জাত ধর্মের বিভেদ ভুলে সবার পাশে দাঁড়ায়। ফজিলার এমন কাজের জন্য গর্ব হয় তাদের। এদিনের এমন কাজের প্রশংসা করেছেন এলাকার বহু মানুষ।