একা পেয়ে তৃণমূল কর্মীর হাত পা ভাঁঙার অভিযোগ তৃণমূল কর্মীর

আজিজুর রহমান, গলসি : তৃণমুলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে উপ্তত্ত গলসি ১ নং ব্লকের ঘাগরা গ্রাম। গ্রামের তৃণমূল কর্মী নুর আমিন মোল্লা ওরফে বকুলকে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ। মেরে তার দুই হাত ও পা ভেঙে দেওয়া হয় বল তিনি জানান। তার অভিযোগ, এদিন বেলা এগারোটা নাগাদ তিনি তার মেয়ের বিয়ের জন্য খাট কিনতে গিয়েছিলেন গ্রামেরই একটা ফার্নিচারের দোকানে। সেখানেই দলের অপর গোষ্ঠী জনা দশ পনেরো লোক চড়াও হয়ে তাকে টাঁঙি, রড় ও দা দিয়ে ব্যাপক মারধর করে। ঘটনার জেরে মাটিতে লুটিয়ে পরেন তিনি। তিনি বলেন, আচমকা ফার্নিচারের দোকানের সামনেই তাকে মারধর করা হয়। তবে তাকে কেন মারা হল তিনি তা জানেন না। তিনি জেলা সহ সভাপতি জাকির হোসেনের ও বিধায়ক নেপাল ঘরুইয়ের দল করেন। তাকে যারা মেরেছে তারা ব্লক সভাপতি জনার্দ্দন চ্যাটার্জীর সাথে দল করেন। খবর পেয়ে গলসি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পুরসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে আসে। সেখানে তার অবনতি হওয়ায় তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঘটনার জেরে আবারও প্রকাশ্যে এলো তৃণমূলের গোষ্ঠীদন্দ। প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তথা জেলা তৃণমূল সহ সভাপতি, জাকির হোসেন বলেন, ওই ছেলেগুলো সিপিএম এর আমলে আমাদের তৃণমূলের ছেলে বকুলকে ধরে মেরেছিল। তারপর তারা জেলা সংখ্যালঘু সেলের সহসভাপতি মহম্মদ মোল্লার হাত ধরে তৃণমূলে আশ্রয় নিয়েছিল। ঘটনায় মহম্মদ মোল্লার এক শালক জড়িত আছে। আগে ঝামেলার পর কিছুদিন হল গ্রামটি শান্ত ছিল। বর্তমানে জনার্দ্দন চ্যাটার্জী ব্লক সভাপতি ঘোষণা হওয়ার পর ব্লক সভাপতি তাদের গ্রামে মিটিংয়ে গিয়ে উসকানি দিয়েছিল। এরজন্যই আজ ওকে ব্যপক ভাবে মারধর করেছে। তার দাবী, বকুল ৯৮ সাল থেকে দলের  কর্মী। পুলিশ বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা না নিলে ব্লকে অশান্তি বেড়ে যাবে। এদিকে জেলা সংখ্যালঘু সেলের সহসভাপতি মহম্মদ মোল্লা বলেন, ওই অঞ্চলে আমার নিজস্ব কোন সংগঠন নেই। আর আমার কোন অনুগামীও নেই।  ওখানে আগে প্রাক্তন ব্লক সভাপতি জাকির হোসেনের সংগঠন ছিল। বর্তমান ব্লক সভাপতি জনার্দ্দন চ্যাটার্জ্জী হওয়ায় ওই গোষ্ঠী দুইভাগ হয়েছে। ঘাগরা গ্রামে আমার শ্বশুর বাড়ি। তাদের পরিবার বড় হওয়ায় তারা কেউ জাকির হোসেনের সাথে দল করে। কেউ জনার্দ্দন চ্যাটার্জীর সাথে দল করে। তবে কি কারনে মারামারি হয়েছে সেটা জানিনা। গলসি ১ নং ব্লক তৃণমূল সভাপতি জনার্দ্দন চ্যাটার্জ্জী বলেন, গোষ্ঠীদন্দ কথাটা মুখে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রাম্য বিবাদের কারনে ব্যক্তিগত রেষারেষির ফলে একে অপরকে গালিগালাজ হয়েছে। সেখান থেকেই এই ঘটনা। আর এখন সবাই তৃণমূল। পুলিশ গিয়ে তদন্ত করছে। প্রাক্তন ব্লক সভাপতি জাকির হোসনের উস্কানি দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ও কি বলছেন সেটা ওর বিষয়। তিনি কখনও কোন বিষয়ে উস্কানি দিয়ে ঝামেলা লাগাননা। বরং যে যে জায়গায় ঝামেল আছে, যেগুলিতে অন্যরা আগুন লাগানোর চেষ্টা করছে, দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে, ব্লক সভাপতি সেগুলো নেভায়। ব্লক সভাপতি নিজস্ব দায়িত্ব সম্পর্কে যতেষ্ট সচেতন। গোষ্ঠীদন্দ প্রসঙ্গে গলসির বিধায়ক নেপাল ঘরুই বলেন, একটা মারামারি হয়েছে বলে শুনেছি। এটা পুরনো গ্রাম্য বিবাদের জেরেই হয়েছে। এতে গোষ্ঠীদন্দ বলে কিছু নেই।