|
---|
মোল্লা জসিমউদ্দিন : মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এর এজলাসে উঠে হাইকোর্টেরই এক আইনজীবীর উপর দুস্কৃতিদের ক্রমাগত আক্রমণ বিষয়ক মামলা।
এদিন আক্রান্ত আইনজীবী মুকুল বিশ্বাসকে পুলিশি নিরাপত্তায় বাড়ি ফেরানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নদীয়ার চাকদহ থানার পুলিশকে এই নির্দেশ দেন। আজ অর্থাৎ বুধবার ওই আইনজীবী কে বাড়িতে ফেরাতে হবে। পাশাপশি তাঁর বাড়িতে নজরদারি চালানোর জন্য পুলিশকে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরা সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। আইনজীবী মুকুল বিশ্বাসকে প্রয়োজনে পুলিশি নিরাপত্তাও দিতে বলেছেন বিচারপতি।
মামলাকারীর আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, -‘ স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের অনুগামীদের বে-আইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে মামলা লড়ার জন্য মামলকারীর বাড়িতে হামলা চালানো হয়। চেম্বার, জিম, গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। জেলা পুলিশের সুপার, এডিশনাল সুপার সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকদের উপস্থিতিতে গুলি, বোমা চলে। তারপর থেকে আইনজীবী বাড়ি ছাড়া”। সরকারি আইনজীবী সব অভিযোগ অস্বীকার করে মামলাকরীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ আনেন। শুনানি চলাকালীন সরকারি আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি। তিনি বলেন, -‘ রায় কী হবে সেটাও কী আপনি বলে দেবেন? ‘ মামালাকারীর আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ বলেন, -‘ পঞ্চায়েত প্রধানের কোথায় কাজ করছে পুলিশ’। এরপরই বিচারপতি মামলাকারীকে নিরাপত্তার নির্দেশ দেন। এর আগে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী ও সাংবাদিক মুকুল বিশ্বাসের জীবন ও জীবিকা বাঁচানোর জন্য রাজ্য পুলিশের ডিজি কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল রাজভবন। পাশাপাশি এই আইনজীবীর ওপর পুলিশ, মাফিয়া এবং রাজনৈতিক নেতাদের যে সম্মিলিত অত্যাচার চালানো হচ্ছে তার রিপোর্টও চেয়ে পাঠিয়েছিল রাজভবন।সম্প্রতি এই মর্মে রাজ্যপালের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল ডিজি কে। চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে আবেদনকারী আইনজীবী মুকুল বিশ্বাসকেও।জানা গেছে, হাইকোর্টে একটি মামলা জেতার পর চলতি বছরের প্রথম দিকে প্রথমে আইনজীবীর দুই মক্কেলকে মারধর করা হয়। এরপর আইনজীবী মুকুল বিশ্বাসের নদিয়া চাকদার বাড়িতে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও পুলিশের নেতৃত্বে রাতভর তাণ্ডব চালানো হয় বলে অভিযোগ । তার বাড়ি, গাড়ি, চেম্বার, জিম ভেঙে দেওয়া হয়। চলে গুলি বোমা। রানাঘাট জেলা পুলিশের উপস্থিতিতে এই আইনজীবী এবং তার মক্কেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন অবশ্য শতাধিক আইনজীবীর সওয়াল-জবাবে আদালত থেকে জামিন পেয়েছিলেন তাঁরা । অভিযোগ, তবে পুলিশ ও শাসক দলের তরফে ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হতে থাকে এই আইনজীবী কে। সপরিবারে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তিনি ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দেন তিনি।মুকুল বিশ্বাস জানিয়েছেন, -‘ স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান গরু পাচার এবং অস্ত্র কারবারের সঙ্গে যুক্ত। পঞ্চায়েত প্রধান ও চাকদা থানার আইসি সহ একাধিক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা লড়ছেন তিনি। তাতেই পুলিশ এবং শাসকদলের রাগ’। তার মামলায় পঞ্চায়েত প্রধানের ভাই ও চকদা থানার মেজবাবু তিন মাস জেল খেটেছেন। এলাকায় তোলাবাজি বন্ধ। এতেই পুলিশের একাংশ ও স্থানীয় নেতাদের রাগ তার ওপর’। তাকে একাধিক মিথ্যে মামলাতেও ফাঁসানো হয়েছে বলে তিনি জানান। সম্প্রতি রাজ্যপালের চিঠি পেয়ে তিনি খুশি। রাজ্যপাল সঠিক পদক্ষেপ করেছেন ,সুবিচার পাবেন বলে আশাবাদী এই আইনজীবী ।তবে অভিযুক্তদের তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।