ব্যস্ততায় চোখে সর্ষেফুল দেখেছেন চাষিরা, ভোটের আগে ঘানি ভাঙানো সরিষার তৈলমর্দন হতে পারে কম খরচেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, নতুন গতি, নদীয়া; টরি, শ্বেত, এবং রাই মূলত এই তিন প্রজাতির সরিষা চাষ হয়ে থাকে আমাদের দেশে। ফসল বোনা থেকে পাকা পর্যন্ত 70-80 দিন সময় লাগে, অর্থাৎ আশ্বিন-কার্তিক মাসে বপন করে মাঘফাগুন মাসে ফসল পাওয়া যায়। ফুল ফল পাতা সবটাই অত্যন্ত জনপ্রিয় খাদ্যের বিভিন্ন রকমের রেসিপি সকলেরই জানা! আর সাদা হোক বা কালো, সরষে বাটা! গৃহিণীদের কাছে সর্ব ঘটের কাঁঠালি কলার মতো।

    সর্ষের ডিজে 40 থেকে 44 ভাগ তেল থাকে, বাকি অংশ খোল হিসেবে গবাদি পশুর খাদ্য, গুরুত্বপূর্ণ সার এমনকি রূপচর্চা বা ঔষধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয় এই খোল। সরষের তেলে 1927 ক্যালরি থাকে, তাই রান্নার ভোজ্যতেল হিসেবে স্বাদ এবং উপকারী হিসেবে অন্য সব তৈলবীজ কে পেছনে ফেলে সরিষাই প্রথম। অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাংগাল হওয়ার কারণে চুল ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্বের সাথে ব্যবহৃত হয়। নানা বিধ উপকারী ফ্যাট, ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন সি ই এবং এ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম এবং আয়রনের ঠাসা এই দানাশস্যতে ক্যান্সার, বাতের ব্যথা, মাইগ্রেনের চিকিৎসা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ফুসফুসের সমস্যা বা অ্যস্থেমার , কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে, মাতা এবং বীজ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

    দুই থেকে চার সেন্টিমিটার গভীরে ঝুরঝুরে মাটিতে এই সর্ষের বীজ বপন করার তিন দিনের মধ্যে নতুন চারা গাছ জন্মায়। 25 -30 দিনের মধ্যে ফুল আসার আগে একবার এবং 50- 55 দিনের মধ্যে ফল ধরার আগে দ্বিতীয়বার সেচ দিতে হয়, মাঝে শুধু একবার জৈব সার। আমন ধানের ওঠার পর বোরো এই স্বল্প সন্ধিক্ষণে টরি জাতীয় সরষে বীজ ব্যবহার করে থাকেন কৃষকরা। তবে এক্ষেত্রে ধান চাষের তাড়া না থাকলে, অধিক ফলনশীল বীজচাষের মাধ্যমে ফলন বেশি পাওয়া যায়। সরষে বাড়ি নিয়ে মাড়ন দেওয়ার, সুবিধা এখন মেশিনে প্রাপ্ত হচ্ছে মাঠে বসেই। স্থানীয় ভাষায় হলা গাড়ি বিঘা প্রতি 500 টাকার বিনিময়, গাছ থেকে ফল, এবং ফল থেকে বীজ আলাদা করে দেবার সুবর্ণ সুযোগ কেউ হাতছাড়া করেন না! তাই অত্যন্ত ব্যস্ত কৃষক এখন চোখে সর্ষেফুল দেখছে! আর সামনে আসন্ন ভোটে আগ্রহী রাজনৈতিক কর্মীরা, ব্যস্ত কম দামে ধান ভাঙানোর সরষের তেল মর্দনে!