|
---|
সংবাদদাতা, ভাঙ্গড় : ৮,মার্চ ২০২৫। হাতিশালা সরোজিনী হাই মাদ্রাসায় শিক্ষক শিক্ষিকারা তাদের একটি দাবি নিয়ে আলোচনার জন্য ৭ মার্চ শুক্রবার টিআইসি বাবুলা সরদারের কাছে যান। শিক্ষক শিক্ষিকারা বলেন শনিবার যেহেতু হাফ ডে, দু টোয় ছুটি অথচ একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা রয়েছে যা চলবে সাড়ে তিনটে পর্যন্ত । আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকা সংখ্যায় অনেক। দুটো ভাগে ভাগ করে দিলে আমরা সবাই উপকৃত হতে পারি।
কিন্তু টিআইসি বাবুলা সরদার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই সামান্য মানবিক আবদার মানতে অসম্মত হন। বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ চলে যুক্তি পাল্টা যুক্তি। টিআইসি বাবুলা সরদার শিক্ষক শিক্ষিকাদের তীব্র যুক্তি বাণে নিজেকে সামলাতে না পেরে বলে ওঠেন এটা আমার অর্ডার। আপনাদের মানতেই হবে। যদি মনে হয় এটা অনিয়ম আপনারা অমান্য করতে পারেন। শিক্ষক শিক্ষিকারা টিআইসির এমন আশাতীত মনোভাব দেখে তারা কথা না বাড়িয়ে স্টাফ রুমে ফিরে আসেন। ইত্যবসরে টি আই সি বাবুলা সরদার সেক্রেটারি মনিরুল সাঁফুইকে শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করে তোলেন এবং তিনি সেক্রেটারিকে সঙ্গে নিয়ে স্টাফ রুমে এসে শিক্ষক শিক্ষিকাদের উপর চড়াও , হুমকি ও হেনস্থার কাজে পুরোপুরি মদদ দেন। শিক্ষক শিক্ষিকারা এক জোটে টিআইসি বাবুলা সরদারের নেতৃত্বে এম সির সেক্রেটারি মনিরুল সাঁফুইয়ের এই অনাঙ্খিত রনং দেহী আচরণের তীব্র প্রতিবাদ করেন। পুরো ঘটনাটি রেকর্ডিং করতে গেলে শিক্ষক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন এর হাত থেকে মোবাইলটি কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা করেন সেক্রেটারি মনিরুল সাঁপুই। ধস্তাধস্তির পর শিক্ষকদের প্রতিরোধের মুখে তিনি মোবাইলটি কেড়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে স্টাফ রুম থেকে তর্জন গর্জন পূর্বক বেরিয়ে যান। শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন ধস্তাধস্তির সময় আমার হাতের কব্জিতে আঘাত লাগে এবং জামা ছিঁড়ে যায়।
এখন শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই অযোগ্য অনৈতিকভাবে আঁকড়ে থাকা টিআইসির পদ থেকে বাবুলা সরদারের অপসারণ এর জোরালো দাবি তোলেন। টিআইসি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে এমন আচরণ করছেন কেন? প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষক শিক্ষিকারা ক্ষোভের সুরে সংবাদ দাতাকে জানান–উনি হলেন শিক্ষক সমাজের কলঙ্ক। অনিয়ম দুর্নীতি হল উনার আসল রূপ। তাই দীর্ঘ আড়াই বছর যাবৎ প্রধান শিক্ষকের পদ ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও আজ অবধি উক্ত শূন্য পদ পূরণের জন্য কোন চেষ্টা না করে সহকারি প্রধান শিক্ষকের পদ দখল করেছেন সম্পূর্ণ অনিয়মের মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে। ওই একই কায়দায় টিআইসির পদ ও আঁকড়ে বসে আছেন। আমরা যেহেতু 34 জন শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্বাক্ষর পূর্বক লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানিয়েছি প্রধান শিক্ষকের আশু প্রয়োজন। আমাদের মাদ্রাসায় প্রায় ২০০০ ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক শিক্ষাকর্মী ও অন্যান্য মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন স্টাফ। এখানে একজন প্রধান শিক্ষকের সঙ্গত অভাব এটা আমরা উপলব্ধি করলেও উনার বক্তব্য আমি তো ভালোই চালাচ্ছি। হেডমাস্টারের কি প্রয়োজন? টি আই সি বাবুলা সরদারের ছাত্র স্বার্থ বিরোধী এমন মনোভাবের সঙ্গে আমরা সহমত পোষণ না করায় উনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের সঙ্গে এমন দুর্ব্যবহার করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
টিআইসি অভিযোগ তুলেছেন — আপনারা সরকারি নিয়ম রীতি মানছেন না। ছাত্র ও মাদ্রাসার স্বার্থের পরিপন্থী কাজে আপনারা নিয়োজিত। প্রশ্নের উত্তরে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান টিআইসির মুখে এসব কথা সাজেনা। উনি ছাত্র ও মাদ্রাসার সামগ্রিক মানো ন্নয়নের পরিপন্থী কাজে সিদ্ধহস্ত। সপ্তাহে বারোটি ক্লাসের জায়গায় আটটি ক্লাস নেবেন বলে একাডেমিক কাউন্সিলকে জানিয়েছেন। মিড ডে মিল সহ মাদ্রাসার অন্যান্য খাতে আয়ের উৎস ও আনুষঙ্গিক খরচের হিসাব অর্থ উপ সমিতি কে নিয়ম মেনে অবগত করতে ভয় পান, পাছে হিসাবে গরমিল ধরা পড়ে। আমরা ছাত্র ও মাদ্রাসার স্বার্থেই এই প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তুলেছি। আমাদের মধ্যে অনেক স্যার ম্যাডামকে নিরাপত্তার ভয় দেখিয়ে আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরাবার অপচেষ্টা করে চলেছেন। তাই মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির কাছে আমাদের একটাই দাবি টিআইসি আমাদেরকে নিয়ে সহমতের ভিত্তিতে মাদ্রাসা চালাতে অপারগ ও ব্যর্থ হয়েছেন। অবিলম্বে টি আইসির উক্ত পদ থেকে অপসারণ পূর্বক স্বচ্ছ ভাব মূর্তি সম্পন্ন যোগ্য ব্যক্তিকে উক্ত পদে বসানো হোক।