|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা :- দুর্গাপ্রতিমা নিরঞ্জনকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে বসে মেলা, তবে বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের “কৃষ্ণনগর” গ্রামে মেলার ঐতিহ্য একেবারে ভিন্ন।এখানকার মেলা এক ব্যতিক্রম,লাঠির মেলা হিসেবে এলাকায় চিহ্নিত।
লাঠির মেলা কেন সে বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের লোকমুখে শোনা যায় কিছু ঐতিহাসিক গল্প।পরাধীন ভারতে তৎকালীন বর্গীদের আক্রমণের হাত থেকে নিজেদের রক্ষার্থে মূল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হত লাঠি।মেলায় তেলে ভাজা,মনিহারি সহ অন্যান্য আনুসাঙ্গিক দোকান বাজার থাকলেও বিশেষ করে লাঠির সম্ভার নিয়ে দোকান থাকবেই।মেলার পার্শ্ববর্তী গ্রাম পছিয়াড়া,যশপুর, লোহাগ্রাম,কান্তোর,
সালুঞ্চি সহ প্রায় ১০-১২ টি গ্রামের প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য এই মেলাপ্রাঙ্গণে আনা হয়। জাতিধর্ম নির্বিশেষে এই মেলায় মিলিত হয় হিন্দু- মুসলমান সব সম্প্রদায়ের মানুষজন ।এ এক ধর্মীয় সম্প্রীতি ও গ্রামীণ সংস্কৃতির মেলবন্ধন।আনুমানিক প্রায় ৩০০ বছরের পুরাতন এই মেলা। সাহিত্যরত্ন হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের “বীরভূম বিবরণ” গ্রন্থে কৃষ্ণনগরে বর্গী হাঙ্গামার কথা উল্লেখ রয়েছে।স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দা ৯০ বছর বয়সী কিরীটি রক্ষিত শোনালেন তৎকালীন বর্গীদের আক্রমণের কথা। সরু মোটা, ছোটো লম্বা,রংবেরঙের বিভিন্ন ধরনের সাইজ অনুযায়ী লাঠি বেচা কেনা হয়। একদা লাঠির প্রশিক্ষণ দিয়ে লাঠিয়াল বাহিনী গঠন করা হতো ইত্যাদি কথা ব্যক্ত করেন।সেই ধারাবাহিকতা আজও সমানভাবে চলে আসছে। একাদশীর দিন কৃষ্ণনগরে দুর্গাপ্রতিমা নিরঞ্জনের মেলায় স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে অনেকেই বাঁশের লাঠি কিনে থাকেন।