এই মুহূর্তে কেমন আছে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার মানুষজন

বাবলু হাসান লস্কর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা: বছরের পর বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটেছে সুন্দরবন লাগোয়া এলাকা গুলিতে। প্রতিটি বছরে আছড়ে  পড়ছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, তার ফল সরূপ-চরম সংকটের মধ্যে পড়তে হয়েছে সহায় সম্বলহীন পরিবার গুলিকে। স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার পূর্বে নেমে আসছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তার উপরে লকডাউন এর প্রভাব। এক দিকে বাঘে মানুষে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকা সুন্দরবনের অধিবাসী-অপর দিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়,এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। স্বাভাবিক ছন্দে  ফিরতে না ফিরতে প্রাকৃতিক বিপর্যযের  সাথে সাথে লোকালয়ে  বাঘের আনাগোনা, অপর দিকে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাথে সাক্ষাৎ অর্থাৎ সম্মুখ সমরে। নদী বাঁধ টপকে  নোনা জলে প্লাবিত চাষের জমির দফারফা। তার মধ্যেও পিছিয়ে পড়া সমাজের  মানুষদের নানান ভাবে কটুক্তি ও অসম্মান করা হচ্ছে। চরম সংকটের মধ্যে বেঁচে থাকলেও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে না সুন্দরবন লাগোয়া এলাকার মানুষজন।

    রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সুন্দরবন বাসিদের একটু ও সহযোগিতা করলেও একশ্রেণীর অসাধু মানুষেরা বদনাম রটাচ্ছেন। ত্রাণ দেওয়ার নামে সুন্দরবন বাসীদের কলঙ্কিত করছে-বাস্তব না জেনে। কেবল মাত্র সুন্দরবন বেড়াতে আসার নামে গুটিকতক মুড়ির প্যাকেট , চিড়ে, সব্জি,কিম্বা অন্য কিছু দিয়ে- তাতের নিয়ে  নিজেদের সেলফি তোলায় ব্যস্ত। পিছিয়ে পড়া এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক দিক  চিন্তা-ভাবনা না করে, তাদের সম্বন্ধে ধারনা না থেকেও আবোল তাবোল মন্তব্য করছেন। সুন্দরবন বাসীদের সম্বন্ধে অজানা তথ্য তাদের জানা না থাকায় বিভিন্ন জায়গায় এই সমস্ত এলাকার বদনাম রটাচ্ছেন। কেবলমাত্র সুন্দরবন বেড়ানোর অছিলায়, ঘিঞ্জি এলাকা থেকে স্নিগ্ধ শান্ত মনোরম কলকাতার ফুসফুস সুন্দরবন বাসীদের কাছে আসা। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার নিমিত্তে ঝাকে ঝাকে ব্যক্তিরা- সাধারণ মানুষদের কিছু পরিষেবা দিতে। প্রকৃত পক্ষে বাস্তব  তথ্য জানুন,পরে মতা মত পোষণ করুন । বাঘে আক্রান্ত পরিবারদের করুন কাহিনী একবার শুনুন জানুন দেখুন। বাঘের আক্রমন থেকে যে মানুষ বেঁচে ফেরে- যতদিন যাবত জীবিত থাকে ততদিন পর্যন্ত তার কর্মক্ষমতা হ্রাস পেতেই থাকে। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারে না সেই সমস্ত মানুষজন। সব ধরনের সহযোগিতা থেকেএরা বঞ্চিত হচ্ছে । তাদেরকে বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে, কিন্তু তাদের সামাজিক দিক নজর রাখছে না কেউ। একের পর এক তাদের নামে কুৎসা অপপ্রচার কলঙ্কের দাগ ছেটানো  হচ্ছে, কলঙ্কিত করা হচ্ছে তাদের কে। অচিরেই বন্ধ হোক সুন্দরবন বাসীদের জীবন-জীবিকার মানের ঘৃণ্য চক্রান্ত। তাদেরকে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনা, বাঘের আক্রমণে আহত পরিবারের সদস্যরা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবেনা তাদের কর্ম ক্ষমতা হ্রাস পায় কোন দিনের জন্য তারা মূল স্রোতে ফিরতে পারে না। জীবন জীবিকার জন্য নিজের জীবনকে বাজি রেখে যারা মাছ কাঁকড়া মধু সংগ্রহ করার জন্য সুন্দরবনের জঙ্গলে  প্রবেশ করে।তাদের মেহনতের ফল আমাদের রসনা তৃপ্তি করে  আর এই কাজ করতে তাদেরকে বাঘ আহত- কিংবা নিহত করে । আহত ব্যক্তিরা বহু অর্থের বিনিময়ে সুস্থ হলেও তাদের কর্মক্ষমতা হ্রাস পেয়ে যায়। এই সমস্ত  পরিবারকে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে  তাদেরকে বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে একটু সহযোগিতার আশ্বাস দিতে বিভিন্ন  সংগঠনগুলি নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখছে এবং সকলের কাছে পরিচিতি লাভ করছে,কিন্তু অসহায় মানুষরা তেমন কিছুই  সহযোগিতা পাচ্ছে না। সুন্দরবনের লখাই নস্কর, দেউলবাড়ীর তপন মন্ডল ফরোজ মণ্ডল,মনিরুল,অভয়ের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করুন বাস্তবটা বুঝতে পারবেন। তাদের কথায়  কিছু  মানুষরা আমাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসছেন শুধু সেলফি তুলছে আর আমাদের এই সমস্যাগুলো না তুলে ধরে আমাদেরকে নিয়ে ব্যঙ্গ করছে। এমন ব্যঙ্গ অচিরে বন্ধ হউক এবং প্রকৃত পক্ষে আমাদের সম্বন্ধে জানুন।।