|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : ২০১৯ সালের জুন মাস। দিল্লির বসন্ত বিহারে এক বৃদ্ধ দম্পতি ও তাদের ২০ বছরের এক আয়ার মৃত্যু হয়েছিল। তবে সেই ঘটনার কিনারা করতে গিয়ে কার্যত হিমসিম খেতে হয়েছিল পুলিশকে। মূল প্রশ্ন তাদের খুন করল কে? বিভিন্ন সূত্র মেলাতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে দীর্ঘদিন আগে পরিচিত এক ব্যক্তি ২৩ জুন এই ব্যক্তির বাড়িতে এসেছিল। কিন্তু তার সঙ্গে বহু দিন যোগাযোগ ছিল না ওই পরিবারের। সে কেন ওই পরিবারে এল? এরপর শুরু হয় তদন্তের অন্য দিক।
পুলিশ জানতে পারে ওই মহিলার নাম প্রীতি শেরাওয়াত। বয়স ৪২। খুনের দিন সে ওই অ্য়াপার্টমেন্টে এসেছিল। সঙ্গে ছিল তার সঙ্গী মনোজ ভাট। তার বয়স ৩৯। এদিকে অত্যন্ত সুকৌশলে গোটা বিষয়টি সাজিয়েছিল ওই দুজন।
মূলত আয়াকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার জন্য তারা গোটা প্লটটি সাজায়। দুটো মদের গ্লাস রেখে দেয়। দুটো কন্ডোমের প্যাকেটও রাখে বালিশের নীচে। যেন ওই আয়া তার বয় ফ্রেন্ডকে নিয়ে ফ্ল্যাটে এসেছিল। তারপর সে খুন করে পালিয়েছে। এমন বিষয়টি সাজাতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু গোটা প্লট দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। এদিকে ওই বাড়ি থেকে একটি ফোন চুরি গিয়েছিল। পুলিশ কিন্তু সেই ফোনের উপর নজর রাখছিল। ফোনটি সুইচড অফ করা ছিল। একটা সময় সেই ফোনটি কিছুক্ষণের জন্য চালু করেছিল ওই দুজনে। এরপরই পুলিশ ওই দুজনের গতিবিধি সম্পর্কে জানতে পেরে যায়। দুজনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তারা পুলিশি জেরায় ভেঙে পড়ে। জেরায় তারা পুলিশকে জানিয়েছে, গত ১৭ জুন শেরাওয়াত ওই ফ্ল্যাটে এসেছিল। ব্যক্তিগত কাজ আছে এই অজুহাতে সে রাতেও ছিল। এরপর কিছুদিন পরে সে তার সঙ্গীকে সঙ্গে নিয়ে বাইকে চেপে ওই ফ্ল্যাটের কাছে আসে। সিসি ক্যামেরায় যাতে ধরা না পড়ে সেভাবেই বাইকটি রাখে।
এরপর বেল বাজিয়ে তারা ঘরে ঢোকে। ভেতরে ঢুকেই অপারেশন শুরু করে তারা। প্রথমে আয়াকে খুন করে। এরপর তারা বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাকে খুন করে। এরপর সোনার চেন, চুরি, ৯৮,০০০ টাকা চুরি করে তারা পালিয়ে যায়। আর পুলিশকে বোকা বানানোর জন্য সিগারেটের পোড়া অংশ আর কন্ডোম ফেলে রেখে পালায়। মূলত আর্থিক সমস্যাতে পড়েই তারা ডাকাতির জন্য় পরপর তিনটি খুন করেছিল। কিন্তু তবুও শেষ রক্ষা হল না।