হুগলি পান্ডুয়ায় রয়েছে ইটাচুনা রাজবাড়ি যেখানে এসে আপনি নিজেকে রাজার থেকে কিছু কম মনে করবেন না

নিজস্ব সংবাদদাতা : রাজা হতে কে না চায়। তা সে না হয় একদিনের জন্য হলেও সই। কিন্তু রাজা হবো কী করে? রাজত্ব সময়কাল তো শেষ। তবে রাজা হবার উপায় এখনও রয়েছে ভ্রমণপ্রেমী মানুষদের জন্য। শহরের কোলাহল, পিচ গলা রোদ, যানজট এসব থেকে অনেক দূরে গ্রামের মেঠো পথ সবুজ গাছগাছালি ঘেরা এক বিরাট রাজপ্রাসাদ অপেক্ষায় রয়েছে তার রাজার।
হুগলি পান্ডুয়ায় রয়েছে ইটাচুনা রাজবাড়ি। যেখানে এসে আপনি নিজেকে রাজার থেকে কিছু কম মনে করবেন না। রাজার ঘর, রাজপ্রাসাদ, রাজকীয় খাবার সবই থাকবে এই রাজবাড়িতে। এই রাজবাড়ির ইতিহাসও প্রতিটি বাঙালির ছেলেবেলার সঙ্গে যুক্ত। কারণ ছোটবেলায় আমরা অনেকেই শুনেছি ঘুমপাড়ানি মাসির একটি ছড়া। যেখানে বলা হয় , “বর্গী এলো দেশে”। এই রাজপ্রাসদটি সেই বর্গীদেরই। স্থানীয় মানুষরা এই জায়গাকে বর্গীডাঙ্গা বলেও চেনেন।বর্গীরা ছিলেন প্রচন্ড লড়াকু মারাঠা সম্প্রদায়। মারাঠারা বারবার বাংলা আক্রমণ করেছিলেন লুটপাটের জন্য। এদের মধ্যে অনেকেই আবার প্রচুর ধনসম্পত্তি করে রয়ে গিয়েছিলেন বাংলাতেই। ইটাচুনা রাজবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা কুন্দ্রারা ছিলেন তারই উদাহরণ। এই কুন্দ্রা থেকেই পরে হয় কুণ্ডু। সাফল্য নারায়ণ কুণ্ডুর বংশধররা ১৭৬৬ সালে এই রাজবাড়ি তৈরি করেন।আল্পনা দেওয়া বিরাট নাটমন্দির, প্রাঙ্গন জুড়ে বিরাট বিরাট বাতিস্তম্ভ, প্রকাণ্ড ঝাড়বাতি দিয়ে সাজানো ইতিহাসের গন্ধমাখা সুবিশাল বৈঠকখানা মুহূর্তের জন্য হলেও আপনাকে অন্য এক জগতের দরজা খুলে দেবে চোখের সামনে। এই রাজবাড়ীটি হিন্দি সিনেমায় আমরা অনেকেই দেখেছি। রণবীর সিং ও সোনাক্ষী সিনহা অভিনীত লুটেরা সিনেমার কথা মনে পড়ে। সিনেমায় যে বিরাট রাজবাড়িতে সোনাক্ষী সিনহা থাকতেন সেই রাজ বাড়িটি হল এই খন্নানের ইটাচুনা রাজবাড়ি।
ভ্রমণ প্রেমী প্রতিটি মানুষের একদিন বা দুদিনের ঘোরার জন্য আদর্শ স্থান হল হুগলির এই ইটাচুনা রাজবাড়ি। এখানে এসে থাকলে এই রাজবাড়ির সৌন্দর্য আপনাকে এক মায়াবী বন্ধনে আবদ্ধ করবে। রাজবাড়ির খাওয়ার ব্যবস্থাও রাজকীয়। অথেনটিক বাঙালি রান্না বলতে যা বোঝায়, তা সবই পাওয়া যায় এখানে। বনেদী জমিদার বাড়ির অন্দরসজ্জায় সজ্জিত ঝকঝকে কাঁসার থালাবাটিতে পরিবেশিত এই খাবারের স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো।কলকাতা থেকে দিল্লি রোড বা দুর্গাপুর এক্সপ্রেস রোড ধরে খন্নান স্টেশন। ট্রেন ধরলে হাওড়া বর্ধমান শাখার মেন লাইনের ট্রেন ধরতে হয়। হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে সোজা খন্নান। স্টেশনে নেবে অটো বা রিকশা ধরে মিনিট দশেকের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন বিশাল সুসজ্জিত এই রাজবাড়িতে।এই রাজবাড়িতে থাকা এবং খাওয়ার খরচ মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী থাকা ও খাওয়ার দামের শ্রেণীবিন্যাস করা রয়েছে এখানে। এই রাজবাড়িতে ঘুরতে আসার আগে থেকে বুকিং করে আসতে হয়। বুকিং করার জন্য ইটাচুনা রাজবাড়ির ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করতে পারেন। অথবা ফোন করতে পারেন ৯৮৩১০৪৯৮১৬ এই নাম্বারে।