নতুন এক বিতর্কের মুখে আরএসএস নেতা কাল্লাডকা প্রভাকর ভাট

নতুন এক বিতর্কের মুখে আরএসএস নেতা কাল্লাডকা প্রভাকর ভাট

     

     

     

    নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: আরএসএস নেতা কাল্লাডকা প্রভাকর ভাট নতুন এক বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন ম্যাঙ্গালোরের উল্লালকে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করে। এই বিষয়টি অবশ্য নতুন নয়। সংঘ মহল মাঝেমধ্যেই বিরুদ্ধমতাবলম্বীদের পাকিস্তান পাঠিয়ে দেওয়ার নিদান দেয় কিংবা মুসলিম এলাকাকে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করে।

     

    সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োয় প্রভাকর ভাটকে বলতে দেখা যাচ্ছে দক্ষিণ কানাড়ার কিনয়া গ্রাম (এখানেই তিনি একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন) ও তার আশপাশে হিন্দুর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। উল্লাল সম্বন্ধে কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। এরপর কে আমাদের মন্দিরগুলি রক্ষা করবে? আর কেইবা ঐতিহ্যের বাতি জ্বালিয়ে রাখবে? একে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করে বলেন যে পাকিস্তান থাকা সত্ত্বেও এরা এখানে কেন? আমাদের (হিন্দু) সংখ্যা কমছে আর ওদের (মুসলিম) সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এমনই যদি হয় তবে পাকিস্তান বা বাংলাদেশ কেন হয়েছে? আপনারা যদি উল্লাল বাজারে যান তবে সেটাকে আপনার পুরোপুরি পাকিস্তান মনে হবে। কোনও ভিন্নতা দেখতে পাবেন না। ঘরের কাছে পাকিস্তান তৈরি হয়ে গেছে।

     

    দক্ষিণ ম্যাঙ্গালুরুর উল্লাল একটি মুসলিম-অধ্যুষিত অঞ্চল। ২০১১-এর আদমশুমারি অনুযায়ী সেখানে প্রায় ৫৬ শতাংশ মুসলিমের বসবাস। হিন্দু রয়েছেন প্রায় ৩৪ শতাংশ। খ্রিস্টানও রয়েছে ৯.৩৪ শতাংশ মতো। স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক ইউটি খেদার প্রভাকর ভাটের এই বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন পাকিস্তানকে নিয়ে প্রভাকরের এই প্রেম নতুন নয়। কথায় কথায় যেভাবে তিনি পাকিস্তানকে টেনে আনেন তাতে মনে হবে মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ তার গুরু। ভারতের ইতিহাসের চেয়ে পাকিস্তানের ইতিহাস তিনি বেশি পড়েন। বিধায়ক আরও যোগ করেন এই সমাজে যারা বিষ ছড়াতে চায় তাদের কাছে পাকিস্তান একটি জনপ্রিয় বিষয়। উল্লালের প্রতিটি কোনায় আমি শুধু ভারতকেই দেখতে পাই।

     

    বিধায়ক এটাও মনে করিয়ে দেন যে রানি আব্বাক্কার আর্মি বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে উল্লাল থেকে পর্তুগিজদের তাড়িয়েছিল। ষোড়শ শতকে উল্লালের তুলুভা রানি ছিলেন আব্বাক্কা। কয়েক দশক ধরে তিনি পর্তুগিজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং উল্লালকে রক্ষা করেন। বিধায়ক খেদার সেই ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন সেই সময় হিন্দু,মুসলিম, খ্রিস্টান সবাই একসঙ্গে লড়াই করেছিল। সেই সম্প্রীতির ট্রাডিশন এখনও বজায় রয়েছে। সেই ঘটনাকে সবাই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে এখনও। এর আগেও সংঘী প্রভাকর বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। ২০১৯-এর ডিসেম্বরে তার স্কুলের পড়ুয়াদের দিয়ে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মহড়া অভিনয় করিয়ে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করেন। পুলিশে এ নিয়ে অভিযোগও দায়ের হয়েছিল। তবে সেই বিদ্বেষ ছড়ানোর স্বভাব যায়নি প্রভাকরের।