ইন্ডিয়া বুক ওফ রেকর্ড পেল ডায়মন্ড হারবারের মেয়ে

নিজস্ব সংবাদদাতা, ডায়মন্ড হারবার: মাত্র ৮ বছর বয়স অথচ আবৃত্তি, নাচ এবং স্তোত্রপাঠে সিদ্ধহস্ত এক শিশু। ছবি আঁকাতেও রয়েছে সমান দক্ষতা। মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যেই সাত আটটি চরিত্র এঁকে ফেলতে পারে একরত্তি অদ্রিজা। স্তোত্রপাঠের সময় স্পষ্ট সংস্কৃত উচ্চারণে প্রতিবেশীদেরকে মুগ্ধ করে সে। তবে সমান তালে চালিয়ে যাচ্ছে নিজের পড়াশোনাও। এতটুকু বয়সেই আবৃত্তি, হনুমান চাল্লিশা, শিব তান্ডব স্তোত্র এবং ছবি আঁকার জন্য ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডের খেতাব জিতল ডায়মন্ড হারবারের পিরিজপুরের বাসিন্দা অদ্রিজা মুখোপাধ্যায়।
ছোট্ট অদ্রিজার জন্ম পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া শহরে, তবে পুলিশকর্মী বাবা রাজীব মুখোপাধ্যায়ের বদলি হওয়ায় পর থেকেই ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা অদ্রিজা৷ স্থানীয় পাঠভবন নার্সারি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ছে সে। ছোট থেকে বাড়িতে মায়ের কাছে আবৃত্তির তালিম নেওয়া। নাচ এবং আঁকাজোকার প্রাথমিক শিক্ষাও দেন মা মৌসুমী মুখোপাধ্যায়। অদ্রিজার বাবা রাজীব ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান হওয়ায় সংস্কৃত ভাষাটা তাঁর রপ্ত। পুজো দেওয়ার সময় একাধিক স্তোত্র আওড়াতে থাকেন তিনি। বাবার মুখে স্তোত্র শুনতে শুনতে ছোট্ট অদ্রিজাও রপ্ত করে ফেলে স্তোত্র পাঠের স্টাইল। তবে মায়ের তত্তাবধানেই বাড়িতে জোর কদমে সংস্কৃতি চর্চা চলতে থাকে ছোট্ট অদ্রিজার। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করতে থাকে সে। লকডাউন শুরু হওয়ায় পর থেকে বাড়িতে বসে ছবি আঁকা, নাচ এবং আবৃত্তি ঝালিয়ে নেওয়া শুরু হয়। মেয়ে সবধরনের পারফরম্যান্স ভিডিও করে জমিয়ে রাখতে শুরু করেন অদ্রিজার মা। একাধিক ভার্চুয়াল প্রতিযোগিতাতেই সেই ভিডিওও পাঠাতে শুরু হয়। কয়েক মাসের মধ্যে রাজ্য এবং রাজ্যের বাইরে থেকে বহু পুরস্কার জিততে থাকে সে। এরমাঝে গত অক্টোবর মাসে অনলাইনের মাধ্যমে ‘ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস্’-এর জন্য অদ্রিজার নাম জমা দেওয়া হয়। কিছুদিনের মধ্যে সংস্থার তরফে অদ্রিজার পারফরমেন্সের কিছু ভিডিও চাওয়া হয়। সেই মত তার বেশকিছু কাজের ভিডিও পাঠিয়েও দেওয়া হয়। ছোট্ট শিশুর কাজে মনভরে বিচারকদের। রাতারাতি ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস্’-এ জায়গা করে নেয় ডায়মন্ড হারবারের মেয়ে অদ্রিজা মুখোপাধ্যায়। ফোন করে অদ্রিজার মাকে সেই খবর জানানো হয়। প্রথমে কেউই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। গত ৪ ফেব্রুয়ারি মেডেল এবং শংসাপত্র বাড়িতে পাঠানো হলে খুশিতে ফেটে পড়েন পরিবারের সবাই। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ফোনে একেরপর শুভেচ্ছা আসতে শুরু করে।