ভারতে করোনার চতুর্থ ঢেউ কি অবশ্যম্ভাবী? টেস্ট বাড়ানোর জন্য রাজ্যগুলিকে চিঠি কেন্দ্রের

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: ভারতে করোনার চতুর্থ ঢেউ কি অবশ্যম্ভাবী? দেশের সংক্রমণ সর্বনিম্ন হওয়ার পর্যায়েও কেন্দ্র কোভিড টেস্ট বাড়ানোর জন্য রাজ্যগুলিকে চিঠি লিখতে বাধ্য হল।

    এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে জানা যায় চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইজরায়েলে রকেটের গতিতে সংক্রমণ বাড়তে থাকা। এই ঘটনায় চিন্তিত আইসিএমআর থেকে স্বাস্থ্য ভবন।

    আইসিএমআর-এর পর্যবেক্ষণ “আগামী দিনে করোনার কোন অবতার হানা দেবে তা এখনই স্পষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। কারণ, চিন, দক্ষিণ কোরিয়ায় দাপাচ্ছে ওমিক্রন। কয়েকমাস আগেই ওই স্ট্রেনের দাপটে থরহরি কম্পমান হয়েছিল গোটা দেশ। আবার চিন থেকে দক্ষিণ কোরিয়া ঘুরে ইজরায়েল আসতেই সেই ওমিক্রন আবার দ্বিধাবিভক্ত হয়েছে। বিএ ১ এবং বিএ ২। অর্থাৎ ভৌগোলিক চরিত্র ও জলহাওয়ার তারতম্যে একই ভাইরাসের স্ট্রেন দ্রুত বদলেছে। ঠিক যেমনটা একবছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্ট তামাম আফ্রিকা মহাদেশকে কাঁপিয়েছিল।

    আইসিএমআরের সহ অধিকর্তা ডা, সমীরণ পন্ডার কথায় “জলহাওয়ার তারতম্যে ভাইরাস চরিত্র বদল করে। পাশাপাশি বিশ্লেষণ করতে হবে ওইসব দেশে কী ধরনের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার উপরও করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নির্ভর করে।” সমীরণবাবুর কথার রেশ ধরেই আইসিএমআর-এর গবেষক তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জুওলজির অধ্যাপক ডা. সুজয় ঘোষের কথায় “ভারতে যে দু’টি ভ্যাকসিন চলছে– কোভ্যাকসিন বা কোভিশিল্ড- এই দু’টি প্রোটিন ভ্যাকসিন। অর্থাৎ কোভিড ভাইরাসের বাইরে একটি প্রোটিনের খোল থাকে। আর ভিতরে থাকে আরএনএ। কোভ্যাকসিন বা কোভিশিল্ড তৈরির সময় সেই প্রোটিনের খোল ব্যবহার করা হয়। তবে কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে স্পাইক প্রোটিনকে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু চিন, দক্ষিণ কোরিয়া বা ইজরায়েলে কী ধরনের ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হয়েছে তা কিন্তু আমাদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। তবে যতটুকু তথ্য জানা গিয়েছে, জনসন অ্যান্ড জনসন যে এমআরএনএ ভ্যাকসিন তৈরি করেছে তার সঙ্গে কোভিশিল্ডের ব্যাপক মিল। কোভ্যাকসিনের থেকে কার্যকারিতাও বেশি। তবে এটি প্রাথমিক তথ্য।”

    চিকিৎসক গবেষক ডা. দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায় “চিন বা দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনার যে অবতার হানা দিয়েছে সেটি ওমিক্রন। অর্থাৎ বি এ-২। এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বেশি। মৃত্যুর হার কম। কয়েক মাস আগে ভারতে এই ভ্যারিয়েন্ট থাবা বসিয়েছিল। তবে চিন, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ভারতে এলে সেই ভাইরাসের চরিত্র কতটা বদল হবে তাই লাখ টাকার প্রশ্ন। তবে এখনই আঁতকে ওঠার কারণ নেই। ভাইরাসের নিয়ম হল রোগের তীব্রতা ক্রমশ কমতে থাকে। তবে কোভিড থাকবে। আরও দু’একটা মিউটেশন না দেখে বলার মতো জায়গা নেই।”

    কোভিড বিশেষজ্ঞ ডা. যোগীরাজ রায়ের কথায় “কোভিড থাকবে। দেখতে হবে ফের সংক্রমণ শুরু হলে রোগীর অক্সিজেন কতটা প্রয়োজন। তাই পরিকাঠামো বজায় রাখতেই হবে।”