|
---|
আসিফ আলম, নতুন গতি, বহরমপুর :
হযরত মুহাম্মদ (স.) ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ নবী ও রাসুল।
যখন পৃথিবী অরাজকতায় পরিপূর্ণ, মানুষ হাহাকারে লিপ্ত ছিল, শান্তির বিন্দুমাত্র অবকাশ ছিল না, কাটাকাটি খুনাখুনির মধ্যে লিপ্ত ছিল তখন আল্লাহ তাঁকে প্রেরণ করেন মানুষকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য । এবং তিনি শুধু আরব বা মুসলিমদের জন্যই নয় বরং তিনি পুরো বিশ্বের শান্তির প্রতীক। কুরআনে বলা হয়েছে “আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপ প্রেরন করেছি” ( সূরা আম্বিয়া – 107)
যে কোনো মুসলমানকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় হজরত মুহাম্মদ (স.) কেমন ছিলেন? সে হয়ত এক কথায় উত্তর দিবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব।
আল্লার বাণী “আপনি উত্তম চরিত্রের অধিকারী” (সূরা কালাম)। কিন্তু অন্য ধর্মাবলম্বীরা মহানবী (সা.) সম্পর্কে কী ভাবে তা কী আমরা জানি? আসুন জেনে নেই সংক্ষেপে কিছু অমুসলিম মনীষীদের চোখে আমাদের প্রিয়নবী (সা.) কেমন তার কিছু নমুনা ?
নেপোলিয়ন বানাপার্ট:
নেপোলিয়ন বানাপার্ট বলেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরব বাসীদের ঐক্যের সবক দিয়েছেন। তাদের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-কলহ নিরসন করেছেন। অল্প কিছু দিনের ভেতর তাঁর অনুসারী উম্মত বিশ্বের অর্ধেকের চেয়েও বেশি অংশ জয় করে ফেলে। পনের বছর সময়ের মধ্যে আরবের লোকেরা প্রতিমা এবং মিথ্যা দেবতাদের পূজা থেকে তওবা করে ফেললো। মাটির প্রতিমা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হলো। এ বিস্ময়কর সাফল্য মুহাম্মাদ (সা.) এর শিক্ষা ও তার ওপর আমল করার কারণেরই সূচিত হয়েছে।
জর্জ বার্নার্ড শ:
জর্জ বার্নার্ড শ বলেন, আমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্পর্কে অধ্যয়ন করেছি। আমার বিশ্বাস তাঁকে মানব জাতির ত্রাণকর্তা বলাই যথাযথ হবে। আমি বিশ্বাস করি, যদি তাঁর মত কোনো ব্যক্তি আধুনিক জগতের একনায়কত্ব গ্রহণ করতেন, তবে তিনি এর সমস্যাগুলো এরূপতাবে সমাধান করতে পারতেন যাতে বহু আকাঙিত শান্তি ও সুখ অর্জিত হত। আমি ভবিষৎ বাণী করছি, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ধর্ম আগামী দিনে পূর্ণ স্বীকৃতি লাভ করবে যেমন আজকের ইউরোপ তাঁকে স্বীকৃতি দিতে শুরু করেছে।
প্রফেসর সাধু টি এল বাম্বনী:
দুনিয়ার অন্যতম মহৎ বীর হিসেবে মুহাম্মাদ (সা.) কে আমি অভিবাদন জানাই। মুহাম্মাদ (সা.) এক বিশ্ব শক্তি, মানব জাতির উন্নয়নে এক মহানুভব শক্তি।
লিও টলষ্টয়:
তিনি বলেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কর্মপদ্ধতি ছিল মানব চরিত্রের বিষয়কর দৃষ্টান্ত। আর এ কথা বিশ্বাস করতে আমরা বাধ্য। যে, হজরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শিক্ষা ও আদর্শ ছিল একান্ত বাস্তবভিত্তিক।
মহাত্মা গান্ধী:
প্রতীচ্য যখন গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত, প্রাচ্যের আকাশে তখন উদিত হলো এক উজ্বল নক্ষত্র এবং আর্ত পৃথিবীকে তা দিলো আলো ও স্বস্তি। ইসলাম একটি সত্য ও ন্যায়ের ধর্ম। শ্রদ্ধার সঙ্গে হিন্দুরা তা অধ্যয়ন করুক, এবং আমার মতোই ইসলামকে ভালোবাসুক।
এ ডার্মিংহাম:
এ ডার্মিংহাম বলেন, আরবরা ছিল উশৃংখল ও বিভেদপ্রিয়। মুহাম্মাদ (সা.) তাদের ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে দুঃসাধ্য এক অলৌকিক কাজ করেছেন। নিঃসন্দেহে পৃথিবীতে কোনো ধর্মীয় পথ এমন ভাবে প্রদর্শিত হননি; যা মুহাম্মাদ (সা.) এর মতো বিশ্বস্ত অনুসারী মিলেছে। মুহাম্মাদ (সা.) এর শিক্ষা ও আদর্শ আরবদের জীবনধারা বদলে দিয়েছিল। এ কথা কে অস্বীকার করতে পারে?
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আদর্শে নারী জাতিকে মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। এ মর্যাদা নারী জাতি ইতোপূর্বে আর কোনো দিন পায়নি। দেহব্যবসা, সাময়িক বিবাহ এবং অবাধ যৌনাচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাদী-দাসী ও রক্ষিতা প্রভুদের চিত্তবিনোদনই ছিল যাদের কাজ তাদের বিশেষ সুযোগ ও অধিকার দেয়া হয়েছে।
বিভিন্ন কারণবশত দাসপ্রথা এ যুগে বাকী থাকলেও ক্রীতদাসকে মুক্ত-স্বাধীন করে দেয় অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাজ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। দাসদের সঙ্গে সাম্যের ব্যবহার প্রচলিত হয়েছে এবং গোলামেরা ইসলামী আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সু-উচ্চ পদ ও আসনে সম্মানিত করা হয়েছে।
মুহাম্মাদ (সা.) এরশাদ করেন। ‘তোমাদের গোলাম তোমাদেরই ভাই। যে একটি গোলাম আযাদ করলো তার ওপর জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে গেলো। নিজের গোলামদের তা-ই খেতে দাও যা তোমরা নিজেরা খাও। তাদেরকে নিজেদের মতো পোশাক পরতে দাও। সাধ্যাতীত কোনো কাজ এদের দিয়ে করিও না।’