করোনা আক্রান্ত রুগী নিয়ে চলছে নার্সিংহোমের ব্যাবসা জঙ্গিপুর জুড়ে

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক : জঙ্গিপুর, যেখানে সারা দেশে করোনা অতিমারির কারণে সাধারণ মানুষ নাজেহাল।যেখানে কেন্দ্র স্বাস্থ্য দফতর সহ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর মানুষকে এই অতিমারির দাপট থেকে বাঁচাতে তৎপর।সেখানে এই অতিমারী রোগ এবং রুগীদের নিয়ে রীতিমতো ব্যাবসা শুরু করেছে জঙ্গিপুর এর বেশ কিছু নার্সিংহোমগুলি।

    করোনাই আক্রান্ত হয়ে কোনো রুগী যদি এই সমস্ত নার্সিংহোম গুলিতে ভর্তি হচ্ছে তাহলেই শুরু হচ্ছে রুগীর পরিবারের থেকে টাকা নেবার তোড়জোড় শুরু। একবার রুগী ভর্তি করার পর থেকে বাড়তে থাকছে সেখানকার বিল।বিশেষ করে যে সমস্যায় ভুগছে সাধারণ মানুষ, তা হলো অক্সিজেন।আর সেই অক্সিজেন নিয়ে চলেছে এই সমস্ত নার্সিংহোমগুলির ব্যাবসা।কোথাও রুগীদের থেকে নেওয়া হচ্ছে ঘন্টা প্রতি ৩০০ টাকা, আবার কোথাও নেওয়া হচ্ছে ঘন্টা প্রতি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।যদিও বা জেলা স্বাস্থ্য দফতর এর কর্তারা এই বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।একদিনে কোনো রুগীর পরিবার থেকে সব মিলে বিল নেওয়া হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা আবার কোথাও নেওয়া হচ্ছে এক লক্ষ টাকার ও বেশি।মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ এর জেঠিয়া গ্রাম এর এক বাসিন্দা গৌতম দাস করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন রঘুনাথগঞ্জ এর গাড়ি ঘাটের একটি নার্সিংহোমে।তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, গত ২রা মে প্রথমে ভর্তির সময় বলা হয়েছিল এক ধরনের কথা।তার পর যখন পরের দিন ৩রা মে ২৪ ঘন্টা পার হবার আগে আমাদের বলা হয় বিল হয়েছে ২৫ হাজার টাকার কাছাকাছি।আরো টাকা জমা না দিলে রুগীর আর চিকিৎসা করা যাবে না।বাধ্য হয়ে আমরা সেখান থেকে রুগীকে ছুটি করিয়ে নিয়ে আবার সরকারি হাসপাতালে কোনরকম এ ভর্তি করায়।এই সময় যদি রুগীর জীবন এর সঙ্গে টাকা নিয়ে তারা খেলা করে তাহলে আমরা যাবো কোথায়?অপর দিকে রঘুনাথগঞ্জ এর তালাই এর বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি থাকা জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এক কর্মী রঘুনাথগঞ্জ এর বলীঘাটার বাসিন্দা অমল চক্রবর্তী স্ত্রী কমলা চক্রবর্তী অভিযোগ করেন,প্রথম তাঁর জ্বর হয়।চিকিৎসক এর পরামর্শে আমরা তাঁর করোনা পরীক্ষা করায় গত ৫ ই মে।কিন্তু সেই রাতেই তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয় বলে আমার তালাই এর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়।সেখানে ভর্তি করার সময় আমাদের বলা হয়েছিল অক্সিজেন এর জন্য ২০০ টাকা দিন প্রতি লাগবে এবং বেড ভাড়া দিন প্রতি দুই হাজার টাকা।কিন্তু আজকে যখন তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পসিটিভ আসে তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়ে দেয় সেই টাকা দ্বিগুন হারে দিতে হবে।আমি আজকে সকালে ৩০ হাজার টাকা সেখানে জমা করিয়ে ছিলাম।বিকেলে বিল জানানো হয় ৫০হাজার টাকা পার হয়ে গেছে।আরও টাকা জমা দিতে হবে।আমাদের পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।যদি সরকারি ভাবে কোনো সাহায্য পেতাম কোনো সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার তাহলে ভালো হতো।অপর দিকে ওই হাসপাতালে ভর্তি থাকা আর রুগী সুতির হারুয়া গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল হক খান এর পরিবার অভিযোগ করেন,গত চার দিন আগে এখানে ভর্তী করেছিলাম।আজকে পর্যন্ত আমাদের বিল জানানো হয়েছে এক লক্ষ আশি হাজার টাকা।এই অবস্থায় আমরা কৃষক পরিবার আর টাকা জোগাড় করতে পারছি না।যেহেতু রুগীর অক্সিজেন চলছে বলে আমরা রুগীকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতেও পারছি না।এর পর কি হবে আর জানিনা আমরা।জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাসকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।যদিও বিষয়টি জানার পরে জেলা প্রশাসন কে জানাবেন বলে জানিয়েছেন জঙ্গিপুর এর মহকুমা শাসক নিতু সিংলা।