|
---|
নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক:
গ্রীষ্মকাল মানেই তাপদাহ, মাথার উপর আবার সূর্যি মামার লীলাখেলা। বসন্তের বিদায়লগ্নে পত্র মোচন, শল্কমোচনের ফলে জঙ্গলের গাছপালা সবুজপত্র হারিয়ে ফেলে। আর এই পাতা, গাছের ছালে বনজঙ্গল যেন গুদাম ঘরে পরিণত হয়। একদিকে তাপদাহ অন্যদিকে শুষ্ক আবহাওয়ায় প্রায়ই জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে থাকে। সম্প্রতি পুরুলিয়ার অযোধ্যা (৫ ই মার্চ -৮ই মার্চ) ও মেদিনীপুরের জঙ্গলে আগুন লাগে। অযোধ্যা পাহাড় ছাড়াও পঞ্চকোট, জয়চন্ডী পাহাড়ে আগুন লাগে।
অনেক চেষ্টার পর সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে পুরুলিয়া জেলা DYFI কর্মী , বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও দমকল কর্মীরা, পাহাড়ে বসবাসকারী ছোট্ট ছোট্ট ছেলেরাও আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। উঁচু-নিচু পাহাড়ের রাস্তা দিয়ে আগুন নেভাতে প্রচন্ড বেগ পেতে হয়েছে যুব কর্মীদের।
তবে আগুন নেভাতে নেভাতে জঙ্গলের অনেকাংশই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বসন্তের এই শুষ্ক মরশুমে ঝরে পড়া শুকনো পাতায় অনেক সময় আগুন লেগে থাকে। আবার অনেকেই ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে শুকনো পাতায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এদিকে, বন দপ্তরের দাবি, জঙ্গলের শুকনো পাতায় আগুন না লাগানোর জন্য সাধারণ মানুষকে বারবার সচেতন করা হয়। তবে এতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না । শুকনো পাতায় লাগা আগুনের লেলিহান শিখা জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্রে প্রভাব ফেলছে বলে অভিযোগ। চারাগাছ, ফলের বীজ থেকে কীটপতঙ্গ আগুনে পুড়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি পুড়ে যাচ্ছে বহু মূল্যবান বড় গাছও।
তবে এভাবে ঘনঘন জঙ্গলে আগুন লাগলে খাদ্যশৃঙ্খল ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশপ্রেমীরা সাথে বনে জঙ্গলে থাকা প্রাণী, পরিযায়ী পাখি, মৌমাছি এদের জীবন সংকটে পড়ে।এভাবে আগুন লাগতে থাকলে জঙ্গলের উপর প্রকৃতির সন্তান নামে পরিচিত সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষেরা কাঠ, মধু সঞ্চয় করে জীবিকা উপার্জন করে তাদের সংসারে ভাটা পড়বে। আগামীতে গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে তাপমাত্রা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে যদি এভাবেই আমরা বড় জঙ্গল ধ্বংস করতে থাকি তবে।মেদনীপুর জঙ্গলে আগুন লাগার ফলে বনজঙ্গলে থাকা প্রাণীরা গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করে, একটি হাতি আগুনের তাণ্ডব থেকে বাঁচতে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়ে তাণ্ডব চালায়। জঙ্গলকে দাবানলের হাত থেকে বাঁচাতে পুরুলিয়া অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে গড়ে উঠা সিধু কানু মিশনের কর্মকর্তা নরেন হাঁসদা বাউল গানের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন এলাকাতে গিয়ে মানুষদেরকে সচেতনতা করছেন।