|
---|
নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক:অবশেষে সোমবার সংবাদমাধ্যমেই রেহনা জানতে পারেন, উত্তরপ্রদেশের হাথরসে দলিত পরিবারের খবর করতে যাওয়ার পথে মথুরায় গ্রেফতার হয়েছেন কাপ্পান। তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ, বলা হয়েছে, কাপ্পান এবং তাঁর তিন সঙ্গী পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই) এবং তার শাখা সংগঠন ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে যুক্ত। হাথরসে জাতপাতের লড়াই লাগানোর জন্য বিদেশ থেকে অর্থ নিয়েছেন তাঁরা। হাথরসের নির্যাতিতার মৃত্যুর পর গোটা দেশে শোরগোল পড়ে যেতেই ওই নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের প্রাণ ওষ্ঠাগত করে তুলেছিল যোগী প্রশাসন। তবে শুধু ওই দলিত পরিবারই নয়, যোগী সরকারের কোপে পড়েছেন সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানও। স্ত্রীকে তিনি শেষবার ফোন করেছিলেন ৪ অক্টোবর রাত ১২টার সময়ে। আর তারপর থেকেই ফোন বন্ধ তাঁর। অনেকবার মেসেজ বা কল করেও তাঁর সাংবাদিক স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করে উঠতে পারেননি রেহনা সিদ্দিক।
এ প্রসঙ্গে রেহনা বলেন, ‘আমার স্বামী নির্দোষ। ও কখনও অন্যায় করেনি। দেশদ্রোহের অভিযোগ সত্যি নয়। ও শুধু সাংবাদিক হিসাবে সত্যিটুকু দেখাতে হাথরসে গিয়েছিল।’ রেহনা জানাচ্ছেন, গ্রেফতার হওয়ার রাতে সম্ভবত পুলিশ হেফাজত থেকেই তাঁকে ফোন করেন সিদ্দিক। তখনও স্ত্রীকে কিছু জানাননি কাপ্পান। রেহনার কথায়, ‘দিল্লিতে ও মালয়লম সংবাদমাধ্যমের হয়ে কাজ করছিল।
আমায় দু’দিন আগেই বলেছিল, হাথরসে যাবে নির্যাতিতা মেয়েটির মায়ের সঙ্গে কথা বলতে। রাতে ওকে প্রথমে ফোনে না পেয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ওর ডায়াবিটিস আছে। মনে হচ্ছিল, করোনা হয়েছে কি না। পরে খবর দেখে জানতে পারলাম আসল ঘটনা।’ স্ত্রীয়ের অভিযোগ, ‘সংখ্যালঘু হওয়ার কারণেই কাপ্পানকে ফাঁসানো হয়েছে। হাথরসে এতজন সাংবাদিক গেলেন, গ্রেফতার করা হল শুধু সংখ্যালঘু সাংবাদিককে। এখনও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফ থেকে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি।’
কাপ্পানের মায়ের বয়স নব্বই বছর। তাঁকে এখনও জানানো হয়নি, ছেলে গ্রেফতার হয়েছে। ‘ছেলের ফোন কেন আসছে না’র উত্তরে নিত্যনতুন ব্যাখ্যা খুঁজে বার করছেন বউমা। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হলেও দুই ছেলে, এক মেয়ের সামনে স্থির থাকতে হচ্ছে। এ দিকে সিদ্দিকের মুক্তির দাবিতে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছে ‘কেরল ইউনিয়ন অফ ওয়ার্কিং জার্নালিস্টস’।
সংস্থার প্রেসিডেন্ট কে পি রেজি বলছেন, ‘উনি আমাদের এই কমিটির দিল্লির সেক্রেটারি। বহু বছর ধরে সিদ্দিকি কাপ্পানকে চিনি। সংবিধান রক্ষার লড়াই ছাড়া ওই সাংবাদিক আর কিছুই করেননি। আমাদের পেশাগত দায়বদ্ধতা রক্ষার জায়গা ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। ওঁর মুক্তির দাবিতে কেরলের সাংবাদিকেরা প্রধানমন্ত্রীকে গণ-ইমেল করবেন।’ রেহনাও বলছেন, ‘দিল্লির সাংবাদিক বন্ধুরাই ওর জন্য আইনজীবীর পরামর্শ নিচ্ছেন। আমি দিল্লি যাওয়ার কথা ভাবছি।