শিশুদের বিকাশ ও  অপরাধ প্রবণতার ওপর গবেষণা করে দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন কালিয়াচকের বাসিন্দা রাইহান শেখ

মালদা, ২২ জুন: কালিয়াচকের খুন কান্ড যখন তুমুল চর্চা চলছে তখন শিশুদের বিকাশ ও  অপরাধ প্রবণতার ওপর গবেষণা করে দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন কালিয়াচকেরই বাসিন্দা রাইহান শেখ। পাশাপাশি শিশুদের মধ্যে মূল্যবোধের অবক্ষয়, তাদের শৈশবকালীন পুষ্টি ও মানষিক গঠন নিয়েও গবেষণা করে সফল তিনি। কয়েকদিন হল দিল্লি থেকে গ্রামের বাড়িতে এসেছেন রাইহান।  গ্রামের বহ মানুষের মধ্যে খুশির আবহ।

    রাইহানের গবেষণায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে জেলায় ৪০ শতাংশেরও বেশি শিশু অপুষ্টির শিকার। মানষিক সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য উপযুক্ত পরিবেশের অভাব ৫০ শতাংশ শিশুর মধ্যে। ফলে অপুষ্টি, অনুন্নত পরিবেশের মধ্যে শিশু বয়স থেকেই অপরাধপ্রবণতার বীজ বপন হয়ে যাচ্ছে তাদের মধ্যে। জানা গেছে,  রাইহানের বাড়ি কালিয়াচক-২ নম্বর ব্লকের গঙ্গাপ্রসাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ছবিলপাড়া। রাইহান স্থানীয় রথবাড়ি হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক, মোথাবাড়ি হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি থেকে এমএ ও নেট কোয়ালিফাই করা, জওহরলাল নেহেরু ইউনিভার্সিটি থেকে এমফিল ও  সদ্য গবেষণা করে ডক্টরেট উপাধি পাওয়া।

    মালদা জেলার ১৫টি ব্লক ও দুইটি মিউনিসিপ্যালিটি এলাকার নির্বাচিত শিশুদের নিয়ে এই গবেষণা চালানোর পাশাপাশি কালিয়াচকের ৩টি ব্লক ও হবিবপুর ব্লকে শিশুদের বাড়িতে গিয়ে পর্যবেক্ষণ ও সমীক্ষা চালান। রাইহান জানান, ‘‌এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে গেলে দেশের প্রতিটি শিশুর স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবেশ নিয়ে ভাবতে হবে। এ ব্যাপারে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।’‌ বুধবার রায়হানের বাড়িতে গিয়ে সংবর্ধনা দেন সংখ্যালঘু সেলের মালদা জেলার চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, উপস্থিত ছিলেন তার ভাই তৃণমূল কংগ্রেসের আইএনটিটিইউসি ব্লক সভাপতি ফারুক আবদুল্লাহ সহ অন্যান্যরা। জেলা সংখ্যা লঘু চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান, ‘‌মালদা জেলা তথা কালিয়াচকের পুরাতন ১৬ মাইল  এলাকায় নারকীয় খুন কাণ্ডে আসিফের ভূমিকায় গোটা রাজ্যের মানুষ হতভম্ব। এই ঘটনায় কালিয়াচক তথা মালদা জেলার সম্মানকে কালিমালিপ্ত করেছে। এই সামাজিক অপরাধ প্রবণতা থেকে বের হতে আবার পথ  দেখাচ্ছেন কালিয়াচকের ছেলে রাইহান সেখ। রাইহানের গবেষণা সমাজকে এক উজ্জ্বল আলোর দিশা দেখাবে। আমি পুষ্পস্তবক দিয়ে সংবর্ধিত করলাম। মানুষ   সমাজবদ্ধ জীব।  সমাজে আশেপাশে নজরদান করতে হবে।কোন শিশু কিশোর কী অবস্থায় রয়েছেন আশেপাশের সেগুলির ওপর আলোকপাত করতে হবে বলে মনে করেন নজরুল ইসলাম । এদিকে  রাইহান বলেন আমার ভালো লাগছে আমার কাজের জন্য সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম এসে সংবর্ধনা জানাল।  আমার গবেষণা শিশুদের মানসিক শারীরিক ও বিভিন্ন বিকাশের ক্ষেত্রে সহায়ক হলে নিজেকে ধন্য মনে করব। আমি আশাবাদী শিশুর উন্নত জীবন গড়তে শুরু থেকেই লড়াই হোক ও আমরা  শপথ গ্রহণ করি।