মালদার ঐতিহ্যশালী দশ মাথার কালীপুজো এবার ৯১ বছরে পা দিল

নতুন গতি নিউজডেস্ক : ১৯৩০ সাল৷ দেশে ইংরেজদের রাজত্ব৷ সারা দেশের সঙ্গে মালদাতেও সাধারণ মানুষের ওপর চরম অত্যাচার চালাচ্ছে ব্রিটিশ শাসক৷ বিদেশি শাসকদের সেই অত্যাচার সহ্য করতে পারছিলেন না শহরবাসীও৷ সেই সময় শহরের পুড়াটুলি এলাকার কিছু যুবক ব্রিটিশ শাসকের অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার সিদ্ধান্ত নেন৷ কিন্তু নানাবিধ অস্ত্রে সজ্জিত বিদেশিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলে লাগবে শক্তি আর সাহস৷ নিজেদের শারীরিকভাবে সুদৃঢ় করে তুলতে কমল কমলকৃষ্ণ চৌধুরী একটি ব্যায়ামাগার নির্মাণ করেন৷ একই সঙ্গে নিজেদের মনকে শক্ত করতে শুরু করেন কালীর আরাধনা৷ শক্তির আরাধনায় তাঁদের আরাধ্যা ছিলেন দশ মাথার মহাকালী৷ সেই পুজো আজও হয়ে আসছে৷ তবে পুড়াটুলি থেকে পুজোর স্থান পরিবর্তিত হয়ে এসেছে শহরের গঙ্গাবাগে৷ সারা জেলায় সেই পুজো দশ মাথার কালীপুজো হিসেবেই খ্যাত৷ এবার সেই পুজো ৯১ বছরে পা দিল৷ তবে করোনার জন্য এবার এই পুজোয় কিছু কাটছাঁট করা হয়েছে৷
পুজোর উদ্যোক্তা, ইংরেজবাজার ব্যায়াম সমিতির সম্পাদক পাপান চৌধুরী জানান, মহাকালীর মূর্তিতেও এখানে কিছুটা বিশেষত্ব রয়েছে৷ দেবীর দশ মাথা, দশ হাত ও দশ পা৷ প্রতিমায় শিবের কোনও অস্তিত্ব নেই৷ দেবীর পায়ের তলায় অসুরের কাটা মুণ্ড৷ প্রতি হাতে বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র৷ গঙ্গাবাগ এলাকায় মায়ের মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে ১৯৮৫ সালে৷হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষও এই পূজোয় অংশ গ্রহন করে থাকে।প্রতিমা আনা থেকে পুস্পাঞ্জলিতেও অংশ নেয় এলাকার মুসলিমরা।
প্রথম থেকে এই পুজো অমাবস্যার পরিবর্তে চতুর্দশী তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে৷ পাঁঠা বলি দিয়ে তার রক্ত দেবীকে উৎসর্গের মধ্যে দিয়ে পুজো শুরু হয়৷ পঞ্চমুণ্ডির আসনে সাধনা করা তান্ত্রিকরাই এই পুজো করে থাকেন৷ তবে করোনার জন্য এবার দেবীর প্রসাদ বিতরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মতো বিষয়গুলি বন্ধ রাখা হয়েছে৷