কেরালায় কাজে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিক জাকিরের নিথর দেহ নিজ বাড়ি ফিরে এলো।

বাইজিদ মণ্ডল, ডায়মন্ড হারবার : ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হল পরিযায়ী শ্রমিকের। মৃত ওই শ্রমিকের নাম জাকির সর্দার (৪২)৷ তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার থানার বাসুল ডাঙ্গা চাঁদা এলাকার বাসিন্দা। জাকিরের মৃত্যুতে স্বভাবতই শোকের ছায়া নেমেছে পরিবারে। কেরলে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি ৷বুধবার শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পরিবারের কাছে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবারের সকলে ৷ জানা গিয়েছে,৪ মাস আগে কেরলের এক ঠিকাদারের অধীনে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়েছিলেন জাকির। রবিবার কাজ সেরে ফেরার পথে উটো নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ইলেকট্রিক পোস্টে ধাক্কা লাগে,তখন অটো ড্রাইভার সহ সকলে ছিটকে পড়ে যায়,তাদের মধ্যে গুরুতর আহত হন জাকির। মাথায় ও মুখে গুরুতর আঘাত লাগে ৷ তার সহকর্মীরা তড়িঘড়ি জাকিরকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ গুরুতর অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউ তে রাখা হয়। আজ বুধবার সকালে চিকিৎসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনা প্রসঙ্গেই মৃত শ্রমিকের পরিবারের এক সদস্য হোসেন শেখ বলেন,কয়েক বছর হলো পরিবারের হাল ধরতে জাকির বিভিন্ন যায়গায় কাজে যেত।সেইররকমই এইবার ৪ থেকে ৫ মাসের জন্য কেরালাতে কাজে গিয়েছিল ৷ লোকসভা ভোটের আগে বাড়িতে ফিরে আসব বললেও ও আর এল না ৷ এল ওর নিথর দেহ,আজ শুক্রবার তার শেষ কৃত্য সম্পূর্ণ হলো নিজ বাড়িতে ৷ সংসারের একমাত্র রোজগারে ছিল এই জাকির। তার দুই মেয়ে ও একটি ছেলে আছে, মেয়ে দুটি বিয়ে দিয়েছে প্রায় ৫ বছর আগে,ছেলে টা ছোট নাবালক,সংসারের হাল ধরার মতো তেমনটা আর কেউ নেই। এ খবর পাওয়ার পর কার্যত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে আমাদের। পরিবারের পক্ষ থেকে জাকিরের দেহ ইতিমধ্যেই পরিবারের সদস্যরা কেরল থেকে শুক্রবার সকালে নিয়ে আসে।বারবার ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে পরিয়ায়ী শ্রমিকের মৃত্যু যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে রাজ্যের শ্রমিকদের কঙ্কালসার দশা। মিজোরামে মৃত্যু হয়েছে প্রায় 18 জন পরিযায়ী শ্রমিকের,সেই ঘটনা এখনো মনে পড়ে বারে বারে,সেই ঘটনার রেশ এখনো কাটেনি ৷ বারংবার শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা কর্ম সংস্থানের বেহাল দশা যেন আরও প্রকট করছে ৷ কার্যত এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা শোনা মাত্রই ডায়মন্ড হারবার বিধানসভার পর্যবেক্ষক সামীম আহমেদ এর নির্দেশ মত তড়িঘড়ি মৃত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এলেন রাজ্য শিক্ষক নেতা মইদুল ইসলাম,১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি গৌতম অধিকারী সহ আরও অন্যান্য এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব বৃন্দ প্রমুখ। তারা দেখা করতে এসে মৃত পরিবারের সকল ধরনের সাহায্য সহযোগিতা ও পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে যান। এই মৃত পরিবার পাশে থাকার আশ্বাস পেয়ে কিছু হলেও একটু স্বস্তি পেল তার পরিবার। এই পরিযায়ী শ্রমিকের আকস্মিত মৃত্যুতে এখনো শোকের ছায়া বাসুল ডাঙ্গা চাঁদা গ্রাম এলাকায়।