|
---|
স্টাফ রিপোর্টার : পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল লোকসভার জামুড়িয়ায় ইস্টার্ন কোলফিল্ডস্ লিমিটেডের শোনপুর-বাজারি এরিয়ার উদ্যোগে পালিত হল নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মদিবস। এরিয়া অফিসের কনফারেন্স হলে বেলা দশটায় শুরু হয় অনুষ্ঠান।
স্মরণীয়, ২৩ জানুয়ারি – আজকের দিনে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে অবিভক্ত বাংলার ওড়িশা বিভাগের কটক শহরে সুভাষ চন্দ্রের জন্ম। আই সি এস পাস করে সুভাষ ইংরেজ সরকারের অধীনে চাকরি না নিয়ে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের অনুপ্রেরণায় বৃটিশ বিতাড়নে রাজনীতির অঙ্গনে আত্মনিয়োগ করেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য সময়ে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হন। কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতির বিরোধিতা করে ফরওয়ার্ড ব্লক নামে নতুন দল গঠন করেন। দেশের স্বাধীনতা আনোয়নে অহিংসাই একমাত্র পথ তিনি মানতে পারেননি। সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নেন। পুনর্গঠন করেন রাস বিহারী বসু প্রতিষ্ঠিত আজাদ হিন্দ বাহিনী। সোভিয়েত ইউনিয়ন, জাপান, জার্মানির সাহায্য নিয়ে সুভাষ চন্দ্র ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেন। তাঁর সৈন্য দলে তিনি নেতাজি নামে সম্মানিত হতে থাকেন। সেই সম্বোধন ছড়িয়ে পড়ে দেশে। দূর্ভাগ্য ভারতবর্ষের, ১৮ আগস্ট ১৯৪৫ দুপুর আড়াইটার সময় তাইহোকু বিমান বন্দর থেকে উড়ে যাওয়া বোমারু বিমান দু’টুকরো হয়ে পড়ে। তারপরও প্রায় সাত ঘন্টা লড়াই করেছিলেন এই বীর সেনানী কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । ২০ আগস্ট তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। ২৩ তারিখ নেতাজির মৃত্যু সংবাদ প্রচার করে জাপানী সংবাদ সংস্থা । মহান নেতার দেশের জন্য আত্মত্যাগকে মূল্যহীন করতে নানান সময়ে রাজনীতি করতে বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হয়েছে এবং আজও তা অব্যাহত আছে। যদিও বর্তমানে ভারত সরকার ১৯৪৫ এর ১৮ আগস্ট দিনটিকে নেতাজির মৃত্যু দিবস বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই, ভারতবাসীর হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন এই মহান দেশপ্রেমী।
কেন্দ্রীয় সরকার স্বাধীনতার হীরক জয়ন্তী বর্ষটিকে অমৃত মহোৎসব রূপে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারী সংস্থা ইসিএলের শোনপুর-বাজারি প্রকল্প আয়োজিত নেতাজি জন্ম জয়ন্তীর অনুষ্ঠানটিকে অমৃত মহোৎসবের অঙ্গ হিসাবে পালন করা হয়। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন এরিয়া জেনারেল ম্যানেজার আর পি মহাপাত্র, এরিয়া প্যারস্যানেল ম্যানেজার আবীর মুখোপাধ্যায়, সংস্কৃতি জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব কাজী মোশারফ হোসেন প্রমুখ । নেতাজির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মহাপ্রবন্ধক আর পি মহাপাত্র বলেন, দেশের জন্য নেতাজির ভাবনা আমাদের সংকল্প হওয়া উচিত। আধুনিক ভারত মজবুত ভারতের তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন। গর্বের বিষয়, খনির সমস্ত আধিকারিক, কর্মী, শ্রমিক সেই কাজে যুক্ত আছেন। এপিএম আবীর মুখোপাধ্যায়, নেতাজি শুধুমাত্র বাংলার, বাঙালির আবেগ নন। তিনি ভারতবর্ষের প্রতিটি মানুষের কাছেই সমীহ আদায় করে নিয়েছেন। তাঁর দেশপ্রেম আমাদের কাজের প্রেরণা। অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা কাজী মোশারফ হোসেন বলেন, নেতাজি তাঁর আজাদ হিন্দ বাহিনীর মধ্যে যে সমন্বয়ের ও সম্প্রীতির আদর্শ প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তা বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের সাধনায় উৎকৃষ্ট নজির। নারী শক্তিকেও তিনি কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন দেশগঠনে। নেতাজিকে তাই ভুলে যাওয়া সহজ কাজ নয়।
অনুষ্ঠানে কোভিড বিধি মেনে প্রকল্পের বহু আধিকারিক, কর্মী, শ্রমিক যোগদান করেন । স্বল্প সময়ের অনুষ্ঠান হলেও মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার কাজী মোশারফ হোসেন ।