|
---|
লুতুব আলি, ১৩ মে : উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ আহিরী নাট্য সংস্থার উদ্যোগে ছয় দিন ব্যাপী নাট্যোৎসব অনুষ্ঠিত হল। খড়দহ রবীন্দ্র ভবনে কনক রায় স্মৃতি নাট্যোৎসবকে ঘিরে চরম উন্মাদনা পরিলক্ষিত হয়। আহিরি র অষ্টম বর্ষের এবছরের বৃহত্তম নাট্যোৎসব। উদ্বোধন করেন অভিনেতা বিজয় মুখোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে স্বাগত ভাষণ দেন আহিরির কর্ণধার বিশিষ্ট অভিনেতা স্বপ্ননীল চক্রবর্তী। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা ও পরিচালক কমল পাল। উদ্ভিদে জল সিঞ্চন এর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে প্রকৃতির রক্ষা করে নিজেদের বাঁচার সামাজিক বার্তা দেওয়া হয়। তাঁদের কোথায় ছিল : থিয়েটার লঘু শিল্পে পরিণত হয়েছে। প্রদর্শিত নাটক গুলির প্রথমেই বালিগঞ্জ স্বপ্ন সূচনার কন্ট্রাক্ট কিলার দর্শক শ্রোতাদের মন জয় করে। দুবরাজপুরের মহিলা নাট্যদল বলল: বিজয়িনী নাটকে ঘরে বাইরে নারীদের মাথা উঁচু করে নিজেকে প্রকাশ করার কথা। খিদিরপুর রংবেরঙের সিস্টেম টু ও সমাদৃত হয়। দর্পণ চন্দননগরের মানুষের খোঁজে, বাঁশবেড়িয়া মঞ্চ দর্পণের সূর্য নেই, স্বপ্ন আছে, দুর্গাপুর মঞ্চনাট্যায়নের পথের বাঁধনে, নৈহাটি যাত্রীকের লকডাউন, রঘুনাথগঞ্জের ঘরে ফেরা, জলপাইগুড়ি দর্পণের ঝাঁসি বিগ্রেড, ময়না অন্য ভাবনার ভৌতিক, জলপাইগুড়ি শিলালি নাট্য মের ফিনিকে, নাটকে সুখ দুঃখের নিপুণ বিনুনিতে মনকে ছুঁয়ে যায়। নাট্য উৎসবের চতুর্থ সন্ধ্যায় সঞ্চালিকা মধুমিতা বসুর উপস্থাপনায় সান্ধ্যকালীন অনুষ্ঠানটি প্রাণ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। অভিনেতা দেবনাথ চট্টোপাধ্যায়, ঈশান মজুমদার ও সঙ্গীত শিল্পী মন স্বি তা ঠাকুরকে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। এরপর পর যে নাটক গুলি মঞ্চস্থ হয় সেগুলি হল: অশোকনগর নাট্যমুখ এর গান্ধারী, কাঁচরাপাড়া ফিনিকের বিলাসী বেদনা নয়, ব্যান্ডেল চার্নিক এর কাল বা পরশু, আমি ই সেই মেয়ে, ব্যান্ডেল নান্দনিকের প্রবাহমান, আহিরী নাট্য সংস্থার নিজস্ব পরিবেশনা : মেঘ জমেছে ঈশান কোণে, আঁতপুর জাগ্রতির পাঁচফোড়ন। নাট্যোৎসবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন কে স্মরণ করে অনুষ্ঠিত হয় শ্রুতি নাটক নতুন বৌঠান। পরিবেশনা সুজয় দাস গুপ্ত ও মৌমিতা সরকার। কলকাতা সোহমের সরল অংক, তমলুক ক্লাবের পরিবেশনায় রবি ঠাকুরের দেনা পাওনা অবলম্বনে নিরু। সবশেষে সিরাজ গঞ্জো নাট্যচক্র দেখালো মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী দেশীয় রাজনৈতিক, আর্থসামাজিক পরিস্থিতির ওপর নাটক : ইদানিং তিনি ভদ্রলোক। নাট্য জগতে কনক রায় কত উজ্জ্বল ভূমিকা রেখে গেছেন তা প্রতিদিনের অতিথিদের কথায় বারবার ফিরে এসেছে সেই সব কথা। সংস্থার সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এই নাট্যোৎসব। শুধু অতিথি আপ্যায়ন নয় নিজেও হাতে তৈরি উপহার সদস্যদের আন্তরিকতা সকলকে প্রাণিত করে। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন সংস্থার সভাপতি উদিতি গোস্বামী। সমগ্র অনুষ্ঠান সূসারী ভাবে সঞ্চালনা করেন বাণী চক্রবর্তী। ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে নাট্য উৎসবে পরিসমাপ্তি ঘটে।