|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : দেশের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ শহর হিসেবে স্বীকৃতি পেল কলকাতা। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর ২০২১ সালের রিপোর্টের ভিত্তিতে তিলোত্তমার মাথায় নয়া পালক যুক্ত হল। মাঝে ২০১৯ সালটিকে বাদ দিলে, গত চার বছরে এই নিয়ে তৃতীয় বার কলকাতা দেশের সবচেয়ে নিরাপদ শহরের তকমা পেল বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। চুরি, ডাকাতি, খুন, খুনের চেষ্টা, ধর্ষণ, নারী নিগ্রহ, দেশের অন্য রাজ্যের তুলনায় কলকাতায় এই জাতীয় অপরাধ কম বলে পরিসংখ্যান তুলে দেখানো হয়েছে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্টে। যে সমস্ত শহরের জনসংখ্যা ২০ লক্ষের বেশি, সেখানে প্রতি ১ লক্ষ জনসংখ্যায় কত সংখ্যক অপরাধ নথিবদ্ধ হচ্ছে, তার নিরিখে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, কলকাতায় খুনের ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি। খুনের চেষ্টা সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়েছে ১৩৫টি। ১১টি ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে। নারী নিগ্রহের ঘটনা ১২৭টি। ডাকাতির অভিযোগ রয়েছি তিনটি এবং চুরির অভিযোগ দায়ের হয়েছে ১ হাজার ২৪৬টি।সেই তুলনায় দিল্লিতে খুনের অভিযোগ জমা পড়েছে ৪৫৪টি। ৭৫২টি খুনের চেষ্টা, ১ হাজার ২২৬টি ধর্ষণ, ১ হাজার ২৩টি নারী নিগ্রহ, ২৫টি ডাকাতি এবং ১ লক্ষ ৯৮ হাজারটি চুরির অভিযোগ জমা পড়েছে। মুম্বইতে ১৬২টি খুন, ৩৪৯টি খুনের চেষ্টা, ৩৬৪টি ধর্ষণ, ৬৪৪টি নারী নিগ্রহ, ১৬টি ডাকাতি এবং ৭ হাজার ৮২০টি চুরির ঘটনা সামনে এসেছে।অন্য দিকে বেঙ্গালুরুতে ১৫২টি খুন, ৩৭১টি খুনের চেষ্টা, ১১৭টি ধর্ষণ, ৩৫৭টি নারী নিগ্রহ, ৩৬টি ডাকাতি এবং ৬ হাজার ৬৬টি চুরির অভিযোগ জমা পড়ে। চেন্নাইয়ে ১৬১টি খুন, ৩০৪টি খুনের চেষ্টা, ৪৫টি ধর্ষণ, ৭৩টি নারী নিগ্রহ, ২০টি ডাকাতি এবং ৪ হাজার ৫৪টি চুরির ঘটনা সামনে এসেছে। হায়দরাবাদে এই সংখ্যা যথাক্রমে ৯৮, ১৯২, ১১৬, ১৭৭, ১১ এবং ২ হাজার ৪১৯।
এই রিপোর্টটি ফেসবুকে তুলে ধরেছে কলকাতা পুলিশ। তারা জানিয়েছে, কলকাতায় অপরাধের হার লাগাতার কমতেই দেখা গিয়েছে। ২০১৬ সালে কলকাতায় অপরাধের হার ছিল ১৫৯.৬ শতাংশ। ২০১৭ সালে তা কমে ১৪১.২ শতাংশ হয়। ২০১৮ সালে আরও কমে এসে পৌঁছয় ১৩৯.৫ শতাংশে। ২০২০ সালে অপরাধের হার ছিল ১০৯.৯ শতাংশ। ২০২১-এ তা আরও কমে ৯২.৬ শতাংশ হয়েছে।
মহিলাদের নিরাপত্তাতও দেশের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে কলকাতা। কেন্দ্রীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের ১৯টি বড় শহরের নিরিখে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের তালিকায় একেবারে শেষে রয়েছে কলকাতা। কেন্দ্রীয় রিপোর্ট নিয়ে কলকাতা পুলিশের বক্তব্য, “এই পরিসংখ্যান আমাদের কাছে যথেষ্ট স্বস্তিদায়ক। তবে আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নিশ্ছিদ্র করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। আরও সুদৃঢ় করে তোলা হচ্ছে পরিকাঠামো। নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। শক্তিশালী হয়েছে প্রযুক্তি প্রহরাও। কলকাতাকে বিপদ-মুক্ত রাখার জন্য আমাদের একাধিক বাহিনী সবসময় প্রস্তুত। এরই পাশাপাশি, সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য একাধিক উদ্যোগ ও প্রচারও জারি রেখেছি আমরা। সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও নিবিড় হচ্ছে রোজ। কলকাতাকে সম্পূর্ণ অপরাধমুক্ত করাই আমাদের লক্ষ্য। পাশে থাকুন।”