লকডাউনের ২০ এপ্রিল থেকে কোন কোন ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে জানুন কেন্দ্রের নির্দেশিকা

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের মেয়াদ ৩ মে পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য ছাড় দেওয়ার কথা জানিয়েছে কেন্দ্র। ২০ এপ্রিল থেকে এইসব ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। তবে অবশ্যই কিছু নির্দেশিকা মেনে।

    কী কী ক্ষেত্রে ২০ এপ্রিল থেকে ছাড় দেওয়া হবে জেনে নেওয়া যাক

    আমার রকমের স্বাস্থ্য পরিষেবা এই ছাড়ের আওতায় রয়েছে। হাসপাতাল, নার্সিং হোম, ওষুধের দোকান, মেডিক্যাল ল্যাবরেটরি, প্যাথোলজি ল্যাব, ভেটারনারি হাসপাতাল, আয়ুষ হাসপাতালকে লকডাউনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।

    যেসব সংস্থায় ওষুধ ও অন্যান্য ড্রাগ তৈরি করা হচ্ছে তাকেও লকডাউনের বাইরে রাখা হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা এবং প্রয়োজন পড়লে এক রাজ্যে থেকে অন্য রাজ্যে রোগী, ডাক্তার, নার্সদের নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকছে না।

    কৃষি বিষয়ক সব ক্ষেত্রকে এই লকডাউনের বাইরে রাখা হয়েছে। উৎপাদিত দ্রব্য বিক্রির জন্য ব্যবহৃত মান্ডি, কৃষিজাত পণ্য বিক্রির দোকান, এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে কৃষিপণ্য নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও কোনও বিধিনিষেধ থাকছে না।

    মৎস্যচাষ, চা, কফি উৎপাদন ও পশুজাত দ্রব্যের উৎপাদন যেমন দুধ, মাখন, ঘি, পনির প্রভৃতির ক্ষেত্রেও কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকছে না।

    ব্যাঙ্কিং সেক্টর আগের মতোই কাজ করবে। ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সাধারণ কাজের পরিধি অনুযায়ীই কাজ করতে হবে। সেইসঙ্গে এটিএমগুলিতে যাতে পর্যাপ্ত টাকা থাকে, তার ব্যবস্থা করতে হবে ব্যাঙ্কগুলিকে। ব্যাঙ্কে অতিরিক্ত সুরক্ষার বন্দোবস্তও করতে হবে।

    সামাজিক কাজে যুক্ত বিভিন্ন সংস্থা তাদের কাজ চালিয়ে যাবে। বৃদ্ধ, শিশু, মহিলা ও গরিবদের জন্য কাজ করা সংস্থাগুলির কাজ চলবে। বয়স্কদের যাতে পেনশন ও অন্য ভাতার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

    স্কুল ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অনলাইনে শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। চাইলে দূরদর্শনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

    মনরেগার আওতায় থাকা সমস্ত কাজকর্ম চলবে।

    তেল, গ্যাসের পরিবহণ চলবে। পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন ও এলপিজি গ্যাসের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পোস্ট অফিসের কাজ চলবে। জল পরিবহণ ও সাফাইয়ের কাজ চলবে। পুরসভাগুলিকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

    টেলিকম ও ইন্টারনেট পরিষেবায় যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

    পণ্য পরিবহনের কাজ চলবে। এই পরিষেবায় ব্যবহার করা ট্রেন, লরি ও অন্যান্য মাধ্যমকে আটকানো হবে না। এই পরিষেবায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পাঠানো যেতে পারে। নিত্যপ্রয়োজনী সামগ্রীর যাতে জোগান না কমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই সব সামগ্রী বিক্রি করার দোকান খোলা থাকবে।

    উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন কোম্পানি, স্পেশ্যাল ইকোনমিক জোন, এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড ইউনিট, ইন্ডাসট্রিয়াল টাউনশিপগুলিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ই-কমার্স কোম্পানি ও কুরিয়র পরিষেবাতেও ছাড় দেওয়া হয়েছে।

    ফুড প্রসেসিং, পাটজাত দ্রব্য উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত কোম্পানিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

    রাস্তা তৈরি, ইরিগেশনের কাজ, বাড়ি বানানোর সঙ্গে যুক্ত সরকারি প্রোজেক্টগুলিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। পুরসভার তত্ত্বাবধানে এই কাজ করা যেতে পারে।

    আরও পড়ুন লকডাউন ২: কী করা যাবে, কী করা যাবে না, নতুন নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্র

    তবে এই সব কাজের ক্ষেত্রেও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সেগুলি হল,

    অফিসের ভেতর, ক্যান্টিন, মিটিং রুম, লিফট, ওয়াশরুম যাতে পরিষ্কার থাকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। মাঝেমধ্যেই স্যানিটাইজেশনের কাজ করতে হবে।

    কর্মীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনও গাড়িতেই যাতে ৩০-৪০ শতাংশের বেশি যাত্রী না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

    প্রত্যেকটি গাড়িকে স্যানিটাইজ করতে হবে।

    প্রত্যেক কর্মীর মেডিক্যাল বিমার ব্যবস্থা করতে হবে।

    স্যানিটাইজার দিয়ে যাতে হাত পরিষ্কার রাখা যায়, তার পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত করতে হবে।

    প্রতিটি শিফটের মধ্যে অন্তত ১ ঘণ্টা ব্যবধান রাখতে হবে।

    বড় জমায়েত যাতে না হয়, কিংবা লিফটে একসঙ্গে বেশি কর্মী যাতে না যাতায়ত করেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

    কোনওভাবেই কাজের জায়গায় যাতে গুটখা বা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি না হয়, কিংবা থুতু ফেলা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কর্মীদের বাইরে অন্য কেউ যেন না থাকে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।