মাধ্যমিকে রাজ্যে চতুর্থ মোহাম্মদ সেলিমকে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা, কেতুগ্রামে অভিনন্দনের জোয়ার

এম এস ইসলাম,কেতুগ্রাম : ভাঙ্গা মাটির ঘর যেন একরাশ চাঁদের আলোয় আলোকিত। কেতুগ্রামের নিরল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র মোহাম্মদ সেলিম ২০২৫ সালের মাধ্যমিকে রাজ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করে পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রথম হয়েছে। মা হারা এই মেধাবী ছাত্র প্রবল দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়ে এই অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে, যা গোটা কেতুগ্রামবাসীর গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    এই আনন্দঘন মুহূর্তে সেলিমের হাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা বার্তা তুলে দেন কেতুগ্রাম বিধানসভার বিধায়ক শেখ শাহনেওয়াজ। উপস্থিত ছিলেন কেতুগ্রাম থানার আইসি পার্থ সারথি মুখার্জি, কেতুগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের এসআই, ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি-সহ সভাপতি, কেতুগ্রাম ২ নম্বর ব্লক সভাপতি, নিরুল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান এবং এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

    বিধায়ক শেখ শাহনেওয়াজ জানান, দরিদ্র পরিবারের সন্তান সেলিমকে সবরকম সহায়তা করা হবে এবং খুব শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে সম্মান জানাবেন। ছোটবেলা থেকেই সেলিম মাতৃহারা। মামার আশ্রয়ে বড় হওয়া এই ছাত্র ভালো কোনও টিউশন পায়নি, কিন্তু তার অদম্য মনোবল, কঠোর পরিশ্রম এবং স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহযোগিতায় সে এই স্থান অর্জন করেছে।

    নির্দল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিব্যেন্দু হাজরা জানান, সেলিম বরাবরই মেধাবী, সে কখনো স্কুল ফাঁকি দেয়নি, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যথেষ্ট সম্মান করে। মাত্র ১৩ জন শিক্ষক নিয়ে হাজারের কাছাকাছি ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে স্কুলটি পরিচালনা হলেও এই অসাধারণ ফলাফল তাদের গর্বিত করেছে।

    মামা ফজলে করিম বলেন, “এ যেন ভাঙ্গা ঘরে চাঁদের আলো। এত দারিদ্র্যের মাঝে বেশি কিছু দিতে পারিনি, কিন্তু আমার ভাগনা যা করেছে, তা আমার কাছে পরম প্রাপ্তি।” সেলিম জানিয়েছে, সে ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় ও গবেষণার মাধ্যমে মানুষের পাশে থাকতে চায়। তার এই কৃতিত্ব মামাকে উৎসর্গ করেছে সে।

    মোহাম্মদ সেলিমের এই সাফল্য প্রমাণ করে, প্রতিকূলতাই মানুষকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিতে পারে।