|
---|
মালদাঃ- টানা বৃষ্টির জেরে জল উপচে পুকুর থেকে ভেসে গিয়েছে মাছ।দিশেহারা মৎস্যজীবিরা। ঋণ নিয়ে কেউ নিজের পুকুরে আবার কেউ অন্যের পুকুরে লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছিলেন।তবে ইয়াসের প্রভাবে টানা বৃষ্টির জেরে জল উপচে পুকুর থেকে ভেসে গিয়েছে মাছ। ঋণ কিভাবে পরিশোধ করবে ,তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় মালদহের চাঁচল মহকুমার ছয়টি ব্লকের মৎস্যজীবিরা।টানা বৃষ্টির জেরে চাঁচল মহকুমায় কোটি কোটির টাকার মাছ ভেসে গিয়েছে বলে আশঙ্কা মৎস্য দপ্তরের।
চাঁচল, ১ নং ব্লক এলাকার মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মৎস্যজীবি নুরজামাল হোসেন জানান,ঋণ নিয়ে ছয় বিঘে পুকুরে মাছ চাষ করেছিলাম।সম্প্রতি মাস সাতেক আগে দুই কুইন্টাল চারাপোনা ছাড়া হয়েছিল।বর্তমানে প্রতিটি মাছের ওজন এক থেকে দেড় কিলো হতো। তবে পুকুরের বাধ ধস পড়ে জল উপচে পড়ে।তাতেই সব মাস ভেসে গিয়েছে। প্রায় তিন লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।এমতাবস্থায় সরকারিভাবে সাহায্য না মিললে ঋণ পরিশোধ করা যাবেনা।পথে বসতে হবে মৎস্যজীবিদের।
ভীমপুর গ্রামের মৎস্যজীবি সফিজান বিবি জানান,তারা লোকের পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে।মৎস্যজীবি তাদের মূল জীবিকা।ঋণ নিয়ে প্রতিবছর মাছ চাষ করে সংসার চলে। এবারও একইভাবে মাছ চাষ করে সাবলম্বী হয়েছিলেন তিনি।তবে টানা বৃষ্টির জেরে সব শেষ। চারবিঘা পুকুরের মাছ জলের তড়ে ভেসে গিয়েছে । ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করিছেলাম।এখন কিভাবে তা পরিশোধ করবো।সরকার সাহায্যে উদ্যোগী না হলে আত্মহত্যা ছাড়া কোনো পথ নেই।
মৎস্য দপ্তর সূত্রে খবর,চাঁচল মহকুমার ৪৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিটিতে গড়ে প্রায় দুই শতাধিক পুকুর রয়েছে।এছাড়াও সরকারি ভাবে খাল বিল বেশ কিছু পঞ্চায়েতী পুকুর।আবার কোথাও সমিতি তৈরি করে সদস্যরা উৎসাহ হয়ে মৎস্য চাষে উদ্যোগী হয়েছিলেন।এছাড়াও মহকুমা এলাকায় বহু চাষি এমজিএনআরইজিএস প্রকল্পে লাভের আশায় চাষের জমি কেটে পুকুর খনন করেছিল।মাছ চাষও শুরু করেছিল।তবে তা জলে ভেসে পুকুর ফাঁকা বলে মৎস্যজীবিরা দাবি করছেন।
চাঁচল-১ নং পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ জানান,তার এলাকায় প্রায় ৭০০ হেক্টর পুকুরে চাষ হয়ে থাকে।বৃষ্টি শেষ হওয়ার পরে এলাকায় খোঁজ নিয়েছি।সিংহভাগ পুকুরের মাছ জলের তড়ে ভেসে গিয়েছে। মৎস্যজীবিরা ক্ষতিপূরণ পেয়ে পরবর্তীতে মাছ চাষে যেন আগ্রহী হয় এবং সরকারি ভাবে যেন সাহায্য পায় তা পঞ্চায়েত সমিতিকে নিয়ে আলোচনায় বসা হচ্ছে।চাঁচলের মহকুমা শাসক সঞ্জয় পাল অবশ্য জানিয়েছেন,মহকুমার ছয়টি ব্লকের মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকরা ক্ষতিপূরণের রিপোর্ট তৈরি করছে।রিপোর্ট পেলেই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব।