গত ৫ বছরে পাহাড়ের জন্য কি কাজ করেছে বিজেপি ? কার্শিয়াঙের সভা থেকে তোপ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

    জাকির হোসেন সেখ, ১২ এপ্রিল, নতুন গতি: আজ কার্শিয়াঙে একটি জনসভা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি জিজ্ঞেস করেন গত পাঁচ বছরে বিজেপি কি কাজ করেছে পাহাড়বাসির জন্য ?
    অতীতের সমস্ত ভীড়ের রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাওয়া জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা চাই পাহাড়ের উন্নতি হোক। আমরা চাই সকল সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে মিলেমিশে থাকুক। তৃনমূল কংগ্রেসের প্রার্থী আপনাদের ঘরের ছেলে, আমাদের গোর্খা ভাই অমর সিংহ রাই পাহাড় আর সমতলের মধ্যে সেতুবন্ধন করবে।
    কিছু কিছু লোক রাজনৈতিক কারণে এখানে এসে আগুন জ্বালায়, আর এর ফলে পাহাড়ের উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
    যদি আরও মানুষ দার্জিলিঙে আসে তাহলে এখানকার পর্যটন, ও অর্থনীতির আরও অনেক উন্নতি হবে।”
    তিনি বলেন, “বিমল গুরুং, রোশন গিরির মত মানুষরা নিজেদের জন্য অর্থলাভ করে বাইরে গিয়ে ব্যবসা করে কিন্তু নিজেদের মাটির কথা ভাবে না, এখানকার মানুষদের কথা ভাবে না।”
    তারপর তিনি বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “দার্জিলিঙের সাংসদকে গত ৫ বছরে পাহাড়ে দেখা যায়নি, নির্বাচনে জিতেই উনি পালিয়ে গেছেন, আর দিল্লি থেকে বড় বড় কথা বলেন।”
    পাহাড়ের যুব সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দার্জিলিঙে যদি শান্তি বজায় থাকে তাহলে এখানে যুব সম্প্রদায়ের জন্য অনেক সুযোগ রয়েছে। পাহাড়ে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে রাজ্য সরকার হিল বিজনেস সামিটের আয়োজন করেছে। আমরা পাহাড়ে আইটি হাব গড়তে চাই।”
    কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দার্জিলিংয়ের প্রতি বঞ্চনার ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন,
    “২০১৪ সালে আমরা কেন্দ্রকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছিলাম ১১টি জনজাতিকে তপশিলি তালিকায় যুক্ত করতে হবে। কিন্তু গত ৫ বছরে ওরা কোনরকম পদক্ষেপ নেয়নি। পাহাড়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য আমরা কেন্দ্র সরকারের কাছে বারবার অনুরোধ করেছি, ওরা দেয়নি। তাই আমাদের রাজ্য‌ সরকার‌ই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখানে হিল ইউনিভার্সিটি তৈরি করবে। কার্শিয়াঙে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস তৈরী হচ্ছে। একটি এডুকেশন হাবও তৈরি করা হচ্ছে।”
    পর্যটন শিল্পের আরো উন্নয়নে তিনি বলেন,”দার্জিলিঙে অনেক মানুষ আসেন, আমরা চাই পাহাড়ে আরও মানুষ আসুক, এখানকার পর্যটনের আরও উন্নতি হোক। এখানে ভোরের আলো পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে।
    কালিম্পংকে আমরা নতুন জেলা ঘোষণা করেছি, এটা এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের ইচ্ছে ছিল।”
    সবুজ সাথী আর উৎকর্ষ বাংলার আন্তর্জাতিক সম্মান প্রাপ্তি প্রসঙ্গে বলেন, “১৬০০ টি প্রকল্পের মধ্যে আমাদের রাজ্য সরকারের দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প ‘উৎকর্ষ বাংলা’ রাষ্ট্রসংঘের পুরস্কার পেয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা ৬ লক্ষ যুবককে প্রশিক্ষণ দিই। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পও রাষ্ট্রসংঘের পুরস্কার পেয়েছে।”
    তারপর বলেন, “গোর্খা রেজিমেন্টের জন্য আমি গর্বিত। আমাদের সেনা-জওয়ানরা আমাদের গর্ব। মোদী বাবুর মত আমরা সেনার নাম করে ভোট চাই না। তাদের অসম্মান করা উচিত নয়। অমিত শাহ, মোদী এনারা আসবেন–যাবেন। কিন্তু আমাদের সেনারা আমাদের দেশের জন্য নিজেদের প্রাণ দেন। নির্বাচনী আচরণবিধি শেষ হলে গোর্খা জনজাতির উন্নয়ন ও তাদের পরিচয়রক্ষার জন্য আলোচনায় বসব।”
    এছাড়াও চা শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বাড়ানো, তাদের
    পাট্টা দেওয়ার জন্য এক্সপার্ট কমিটি গঠন ইত্যাদি নিয়েও বক্তব্য রাখেন।