মামুন ন্যাশনাল স্কুলের হাফেজ ছাত্রদের এম বি বি এসে সুযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা : এক অন্যরকমের কাহিনী। অসম্ভবকে সম্ভব করেছে হাফেজ ছাত্ররা। পশ্চিমবাংলার ইতিহাসে এক নবতম সংযোজন। মামুন ন্যাশনাল স্কুলের অভিনব প্রচেষ্টার ফলে কোরআনের হাফেজ ছাত্ররা সায়েন্স পড়ছে। তারপরে জি.ডি. অ্যাকাডেমি বা অনলাইন থেকে নিট এর কোচিং নিয়ে সরাসরি ডাক্তারিতে ভর্তি। গত কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় এবারে সাফল্য একেবারে অবাক করার মত। হাফেজ হাবিবুর রহমান গাজী মামুন ন্যাশনাল স্কুল থেকে ২০২৪ এ উচ্চমাধ্যমিক দিয়ে ৪৬৪ (১২.৮%) পায়। তারপরেই জি.ডি. অ্যাকাডেমিতে এক বছর নিটের কোচিং নিয়ে এবছর সারা ভারতের তার র‍্যাংক ৩০৯৫৪ প্রাপ্ত নম্বর ৫২১। ২০২২ এ উচ্চমাধ্যমিক দেয় হাফেজ উমার ফারুক। সে এবারের সারা ভারতের র‍্যাংক করেছে ১৫৪২২ প্রাপ্ত নম্বর ৫৪৩। উমার একজন পিতৃহারা ইয়াতিম। তাই সে মামুন ন্যাশনাল স্কুলে বিনা খরচে (মাসে এক টাকাও দিতে হয়নি) উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ে আজ সে এমবিবিএস ডাক্তার হতে চলেছে। জি.ডি. চ্যারিটেবল সোসাইটির কর্ণধার জনাব মোস্তাক হোসেন সাহেবের অর্থ সাহায্যে সমস্ত হাফেজ ছাত্ররা প্রায় বিনা খরচে এখানে পড়াশোনা করে। অন্যান্য বহু দাতা ও শুভানুধ্যায়ীগন এ ব্যাপারে প্রচুর অর্থ দিয়ে এই ছাত্রদেরকে সাহায্য করেন। অন্ধ ছাত্রদের ও এখানে পড়াশোনা সম্পূর্ণ ফ্রি। হাফেজ হাবিবুর রহমান-এর বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগণার হাসনাবাদের দক্ষিণ ভেবিয়া। তার আব্বা মৌলনা মুজিবর রহমান গাজী একটি খারিজি বা দারসে নিযামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক।

    উমার ফারুকের বাড়ি বর্ধমান জেলার শক্তিগড়ে। তার আব্বা নেই। মা গৃহবধূ। অর্থকষ্টের কারণে উমার মাধ্যমিক পাস করার পরে একাদশে ভর্তি না হয়ে মোবাইল সারানো শিখছিল। স্কুলের সেক্রেটারি কাজী মুহাম্মাদ ইয়াসীন খোঁজ নিয়ে তার বাড়ির সদস্যদের বুঝিয়ে স্কুলের হোস্টেলে তাকে ফিরিয়ে আনেন। সে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ৪৪৫ (৮৫%) নম্বর নিয়ে। তারপরে দু-বছরের প্রচেষ্টায় আজ সে ডাক্তার হওয়ার পথে। প্রতিষ্ঠাতা মরহুম গোলাম আহমাদ মোর্তজা সাহেবের রোপিত গাছ আজ ফলে ফুলে সুরভিত। হাফেজ ছাত্ররাও যে অনায়াসে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বিজ্ঞানী হতে পারে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ রেখে চলেছে মামুন ন্যাশনাল স্কুল। এখানকার হাফেজ ছাত্র সিরাজুল ইসলাম সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে অংকে অনার্স ও পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংকে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে পিএইচডি, করেছে। এই অগ্রগতি অভিনব, অনুকরণযোগ্য। শিক্ষক মহাশয়দের অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। সকল ছাত্র ও শিক্ষক মন্ডলীকে শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন স্কুলের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোস্তাক হোসেন।