পরিযায়ী শ্রমিকদের হক আদায় করে, মুখে হাসি ফোটালেন পরিযায়ীদের বন্ধু রিপন

বীরভূম: পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্টের কথা শুনলেই সহায়তার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের বন্ধু পেশায় কলেজ ছাত্র মহঃ রিপন। তেমনি এক ঘটনার সাক্ষী থাকল বীরভূম জেলার পাইকর থানার কাঠিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে কর্মহীন অবস্থায় ছিলেন কিরন, রাজুরা। কাজের আশায় মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুম্বাই শহরের নিউ পানভেল এলাকায় কাজ করতে গেছিলেন। প্রত্যেকের বাড়ি বীরভূম জেলার পাইকর থানার কাঠিয়া গ্রামে।দীর্ঘদিন কাজ করার পর ঠিকাদারের কাছে টাকা চাইলে ঠিকাদার বলে কিছুদিন পর দিব কিন্তু এই ভাবে বেশ কয়েকমাস কেটে যায় কিন্তু টাকা পাইনি শ্রমিকরা। ঠিকাদারের বার বার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণ ছেলে গুলো হতাশ হয়ে পড়ে। ছেলে গুলো বুঝতে পেরেছিল যে হয়তো তারা আর টাকা পাবেন না। তারপর সাতপাঁচ না ভেবে সমাজকর্মী রিপনের সাথে যোগাযোগ করে এবং মুম্বাইয়ের সমস্ত সমস্যার কথা রিপনকে জানান। রিপন সমস্ত ঘটনাবলি শোনার পর তাদেরকে কথা দিয়েছিলেন আমি ব্যাপারটা দেখবো। তারপর মহারাষ্ট্রের লেবার ডিপার্টমেন্ট ও অ্যাডমিনিশটেশনকে জানাই রিপন। যে কাজ কয়েকমাস ধরে আটকে ছিল সেই সমস্যার সমাধান হয় মাত্র তিনদিনে হয়। ঠিকাদার চাপে পড়ে এক লাখ আশি হাজার টাকা বকেয়া চারজন শ্রমিকদের হাতে তুলে দেয় ও বাড়ি পাঠানোর ব্যাবস্থা করে।

    উল্লেখ্য এর আগেও রাঁচিতে কাজ করতে যাওয়া এক ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে দিয়েছিল রিপন। এরকম অনেক শ্রমিককে সহায়তা করেছেন তিনি। ভারত সরকার যখন হঠাৎ করে লকডাউন ঘোষনা করে তখন বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের পক্ষ থেকে হেল্প লাইন সেন্টার খুলে 34282 জন শ্রমিককে সহযোগিতা করেছিলেন তারা এবং এই কাজে অগ্রনী ভূমিকায় ছিল রিপন। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে থাকা শ্রমিকরা বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের হেল্প লাইন নম্বরে ফোন করে সহযোগিতা চাইলে বিভিন্ন রাজ্যের আধিকারিকদের সাথে যোগাযোগ করে শ্রমিকদের কাছে রেশন পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতো রিপন এবং অনেক লোকজনকে সেই সময় বিভিন্ন রাজ্যে থেকে সমস্ত বিনামূল্যে বাড়িতে আনার ব্যবস্থা করেন।

    মোহাম্মদ রিপন জানান, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যে সরকারকে নির্দিষ্ট দপ্তর খুলতে হবে। বাইরে কাজ করতে যাওয়ার আগে প্রতিটি শ্রমিকদের নাম সরকারি ভাবে নথিভুক্ত করতে হবে কারণ তারা বাইরে বিপদে পড়লে যেন সরকারি দপ্তর সরাসরি তাদের সাথে যোগাযোগ ও উদ্ধার করতে পারে। তবে এরকম অনেক ঘটনাতেই পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে থাকতে পেরে খুব ভালো লাগছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের যেকোনো বিপদে আপদে সবসময় পাশে আছি।