|
---|
আলো ইসলাম : আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বক্তা ও ঐতিহাসিক গোলাম আহমাদ মোর্তজা প্রতিষ্ঠিত মামূন ন্যাশনাল স্কুলের আজ পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। মামূন ন্যাশনাল স্কুলের মেমারি , শ্যামসুন্দরপুর, পান্ডুয়া শাখা ছাড়াও বহরমপুরের আল-ফালাহ মিশন, রামপুরহাটের জয়কৃষ্ণ হাইস্কুল ও বারুইপুরের মাইকেল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হয়। মোট ৬০২ জন পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এরমধ্যে ৩৬০ জন বালক ও ২৪২ জন বালিকা ।
মামূন ন্যাশনাল স্কুলের সম্পাদক ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কাজী মুহাম্মদ ইয়াসীন আবাসিক শিক্ষা ব্যবস্থা ও তাঁদের দায়িত্ব সম্পর্কে বলেন, শিক্ষা বাড়িতেও সম্ভব। আমরা অনেকেই বাড়িতেই পড়াশোনা করেছি। কিন্তু হোস্টেল বা আবাসিক ব্যবস্থায় যে অনুশীলনটা তৈরি হয়, বর্তমানে ইন্টারনেট যুগে বাড়িতে তা অসম্ভব। বিশেষ করে যারা বয়ঃসন্ধি পার করছে। তিনি বলেন , আমাদের আজকের পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, ৩৬০ জন বালক ও ২৪২ জন বালিকা । অর্থাৎ ৬৭ %। দেখার বিষয় হচ্ছে, মেয়েদের মধ্যে, অভিভাবকদের মধ্যে সাড়া পড়ছে। এটা ধরে রাখতে হবে। মামূন ন্যাশনাল স্কুলের অভিভাবক কাজী মুহাম্মদ ইয়াসীন সাহেব আরও বলেন, ভবিষ্যতের ভারত নয়, পৃথিবী, – মহিলাদের কাজের সুবিধা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। আমাদের দায়িত্ব সেটা পরিচর্যা করা।
মামূন ন্যাশনাল স্কুলের প্রধান প্রতিষ্ঠান মেমারিতে স্কুল সম্পাদক অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। প্রায় প্রত্যেকটি পরীক্ষা গ্রহণ কক্ষে যান, এবং পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় সতর্কতার পরামর্শ দেন। একান্ত আলাপচারিতায় তিনি বলেন, অভিভাবক মাত্রেই আমরা ছেলেমেয়েদের প্রতি দুর্বল। এটা থাকতেই পারে। কিন্তু সেটা যেন আচার আচরণে ধরা না পড়ে। হ্যাঁ, তিনি হৃদয়ের টুকরো রেখে যাচ্ছেন। তা প্রকাশ পেয়ে গেলে হবে না। ছাত্রছাত্রীরা যদি দেখে আমরা বাবা-মা’কে দুর্বল করে তুলতে পারছি, সেটা তারা সুযোগ নেবে। বিভিন্ন কারণে, বিশেষ করে পড়াশোনার ব্যাপারে কোনও অভিযোগ বা পরামর্শ থাকলে অভিভাবকদের উচিত, শিক্ষক মহাশয়দের সঙ্গে আলোচনা করা। ইয়াসীন সাহেব বলেন, আবাসিক শিক্ষা ব্যবস্থার অনুশীলন হচ্ছে মূল। এখন শিক্ষক মহাশয়দের পর্যবেক্ষণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিকতা বিষয়ক সচেতনতা বাড়ছে।
বিশিষ্ট চিন্তাবিদ কাজী মুহাম্মদ ইয়াসীন সাহেব শিক্ষার সামাজিক প্রবণতা সম্পর্কে বলেন, মিনিমাম এডুকেশন হোক, এটা মেয়েদের ক্ষেত্রে হচ্ছে। কিন্তু গরিব, নিম্ন- মধ্যবিত্ত বাড়ির ছেলেরা এটা পারছে না। খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয়, ১০-২০ শতাংশ ছেলে লক্ষ্য নিয়ে পড়ছে। তাঁর মতে , মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, মালদা জেলার মুসলিম ছেলেরা রুজির টানে, পড়াশোনা বেশিদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছে না। তুলনামূলকভাবে মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, গতবারের থেকে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে । এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, মামূন ন্যাশনাল স্কুল হল, বাংলার পশ্চাদপদ সমাজের ভবিষ্যৎ নির্মাণের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে দৃঢ় প্রত্যয়ী মোস্তাক হোসেন সাহেবের জি ডি চ্যারিটেবল সোসাইটির গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অনেকেই বলেন, মোর্তজা সাহেব প্রতিষ্ঠিত, এখানে ভর্তি করতে পারলে তাঁরা নিশ্চিন্ত থাকবেন। এখানকার শৃঙ্খলার সঙ্গে পড়াশোনার জন্য মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন।
ছবি : মুনির রসুল নাজের