আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পথে হাঁটতে চলেছে মোদি সরকার।

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে আজ সোমবার সকাল দশটার মধ্যেই নর্থ ব্লকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রের কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রক। কিন্তু সেই নির্দেশ মেনে দিল্লিতে হাজিরা হননি তিনি। ফলে এবার বাংলার মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পথে হাঁটতে চলেছে মোদি সরকার। সূত্রের খবর, আলাপনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাঁকে সাসপেন্ড করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে সুপারিশ করতে চলেছে কেন্দ্রের কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রক।

গত ২৮ মে ‘যশ’ পরিস্থিতির ক্ষয়ক্ষতি দেখার নাম করে রাজ্যে এসে তথাকথিত প্রশাসনিক বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু ওই সময়ে দিঘায় আগেভাগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক থাকায় প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের মুখ্যসচিবের বৈঠকে গরহাজির থাকা ভাল মনে মেনে নিতে পারেননি সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটে বাংলার মানুষের কাছে ‘ঘাড়ধাক্কা’ খাওয়া প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সাগরেদরা।

    মুখ্যসচিবকে ‘সবক’ শেখাতে ওইদিন রাতে কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে বদলি করার ফরমান জারি হয়। সোমবার সকাল দশটার মধ্যে তাঁকে নর্থ ব্লকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কেন্দ্রের ওই নির্দেশকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে আখ্যা দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাক্তন আমলারাও মোদি সরকারের নির্দেশের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন। একজন মুখ্যসচিব হওয়া সত্বেও আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় সরকারের কোন পদে বদলি করা হচ্ছে, তা উল্লেখ করেনি কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রক। শুধু তাই নয়, রাজ্যের মুখ্যসচিব হিসেবে তাঁর কর্মজীবনের মেয়াদ বাড়ানো সত্বেও মাত্র চারদিনের মধ্যে দিল্লি তলবের পিছনে যে মোদি সরকারের রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

    কেন্দ্রের চাকরিতে যোগ দিতে হলে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে রিলিজ অর্ডার নিতে হতো। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে কোনও রিলিজ অর্ডার দেওয়া হয়নি। ফলে কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রকের নির্দেশ মেনে দিল্লিতে নর্থ ব্লকে হাজিরা দেওয়া সম্ভব হয়নি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

    একজন বাঙালি আধিকারিকের এমন ‘ঔদ্ধত্য’ দেখে বেজায় চটেছেন দিল্লির নয়া ‘শাহেনশা’ নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর স্যাঙাতরা। কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করার অপরাধে বাংলার মুখ্যসচিবকে ‘সবক’ শেখাতে শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রীর অধীনস্ত কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকরা।