|
---|
মহিউদ্দীন আহমেদ, বীরভূম: সম্প্রীতির অনন্য পীঠস্থান পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার খুষ্টিগিরি দরগাহ্ শরীফ। যেখানে পাঁচদিন ধরে চলছে বাৎসরিক ঊরস মোবারক। বীরভূম জেলার পাঁড়ুই থানার অধীনস্ত খুষ্টিগিরি দরগাহ শরীফে সাড়ে পাঁচ শতাধিক বছর আগে হজরত সাঈয়েদ শাহ্ আবদুল্লাহ কেরমানী সাহেবের আগমন হয়। তাকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠে পবিত্র মাজার শরিফ। গত ২৪ শে ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচদিন ধরে চলছে ঊরস মোবারক। পাঁচ দিন ধরে পবিত্র কোরান শরীফ পাঠ, সুফি মতাদর্শ ও মানবতাবাদ প্রসঙ্গে আলোচনা, ওয়াজ নসিহত, সম্প্রীতির মঞ্চে কাওসার আলীর সত্যপীর, উর্দু কাওয়ালী, মুর্শিদী ও মারেফতি সংগীত, বাউল, লোকগীতি প্রভূতি নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
খুষ্টিগিরি দরগাহ শরীফে হজরত সাঈয়েদ শাহ্ আবদুল্লাহ কেরমানী সাহেবের সুযোগ্য বংশধর দ্বারা এই মাজার শরিফ পরিচালিত হয়ে আসছে। সম্প্রতী আবদুল্লা সাহেবের ১৪ তম বংশধর বজলে রহমান কেরমানী সাহেব ইন্তেকাল করার পর বর্তমান মোতাওয়াল্লী ও সাজ্জাদানেশীন সৈয়দ শাহ্ মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান কেরমানী নেযামী চিশতী সাহেব এই মাজার পরিচালনা করছেন। সঙ্গে রয়েছেন তার ভাই সৈয়দ শাহ মোহাম্মদ মফিজুর রহমান কেরমানী সাহেবও। এই মাজার শরীফে বীরভূমের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই চব্বিশ পরগনা, মুর্শিদাবাদ সহ বিহার, ঝাড়খন্ড সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার হাজার ভক্ত অনুগামী আসছেন। এই খুষ্টিগিরি দরগাহ শরীফের আবদুল্লাহ কেরমানী সাহেবের জীবন ও ঘটনাক্রম নিয়ে দীর্ঘ ইতাহাস রয়েছে। রয়েছে গঙ্গা গড়ে, তেঁতুল গাছ, আবদুল্লা সাহেবের প্রিয় ছাগল দুলালকে চুরি ও হত্যা করার ঘটনার পর ১৪ জনের মৃত্যুর পর কবর সহ নানাবিধ ঘটনায় মোড়া এক অলৌকিক ইতিহাস। যা হাজার হাজার মানুষকে টেনে আনে বীরভূমের এই মাজার শরীফে। এখানে শুধুই যে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন আসেন তা নয়, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনও আসেন সম্প্রীতির পীঠস্হানে কেরমানী সাহেবদের অকৃত্রিম ভালোবাসার টানে।