মোদীর বিদায়ঘন্টা বাজাতে ২৫ বছর পর একই মঞ্চে মুলায়ম মায়াবতী

    জাকির হোসেন সেখ, ১৯ এপ্রিল, নতুন গতি: রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছু নেই, এই আপ্তবাক্য আজ অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেল উত্তর প্রদেশের মৈনপুরীতে অখিলেশ যাদবের এক নির্বাচনী সভায়। ২৫ বছর পর এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে মোদীর বিদায়ঘণ্টা বাজাতে একে অপরের হাত ধরে শপথ নিলেন মায়াবতী এবং মুলায়ম সিং যাদব।
    আগেই মায়াবতীর সাথে জোট হয়েছিল মুলায়ম পুত্র অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির। তাতে প্রথমে অখুশিই ছিলেন মুলায়ম। দেওবন্দ, বাদাউন এবং আগ্রাতে দুই দলের সম্মিলিত প্রচারেও মুলায়ম যোগ দেননি, এমনকি বিএসপি নেত্রীর উপস্থিতিতে নিজের কেন্দ্রের জনসভাতেও আজ যোগ না দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন। শেষ মুহূর্তে পুত্র তাঁকে রাজি করিয়ে শেষ হাসি হাসলেন। মৈনপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী হ‌য়েছেন মুলায়ম সিং যাদব।

    মুলায়ম সিং যাদবের সমাজবাদী পার্টি এবং মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির এই দুই নেতা-নেত্রী আগাগোড়াই একেঅপরের প্রবল শত্রু হিসেবে পরিচিত। ১৯৯৫ সালে সমাজবাদী পার্টির হাতে আক্রান্ত হওয়ার পর, মুলায়ম সিং যাদবের সাথে চিরশত্রুতার শপথ নিয়েছিলেন বিএসপি নেত্রী। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর উত্থানে সেই শপথ আপাতত ঠান্ডা ঘরে। নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই একেঅপরের কাছাকাছি আসতে বাধ্য হয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত।
    মুলায়মের হাত থেকে দলের দায়িত্ব এখন অখিলেশের হাতে।
    গতবছর কয়েকটি উপ-নির্বাচনে এসপি-র সঙ্গে জোট বেঁধে বিজেপিকে পরাস্ত করার পরে জোটের নয়া ফর্মুলায় বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন মায়াবতী এবং বর্তমানে এসপি নেতা অখিলেশ যাদব। বিজেপিকে হারানোর লক্ষ্যে এবারের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে এসপি, বিএসপি এবং রাষ্ট্রীয় লোক দল অর্থাৎ আরএলডি যে জোট করেছে তাতে রাজ্যে কংগ্রেসের মতো দুর্বল দলকে কৌশলগত কারণে দূরে রেখেছে। তারপরে এই মায়াবতী ও মুলায়মের এক মঞ্চে হাজির তো সোনায় সোহাগা।
    উত্তরপ্রদেশে এবারে এসপি ৩৭টি , বিএসপি ৩৮টি এবং আরএলডি তিনটি আসনে লড়ছে। কংগ্রেসের মুখ্য দুই নেতা রাহুল গান্ধীর কেন্দ্র আমেথি এবং সোনিয়া গান্ধীর কেন্দ্র রায়বেরেলিতে কোনও প্রার্থী দেয়নি এই জোট।

    মৈনপুরী সহ উত্তরপ্রদেশের ১০টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে তৃতীয় দফায় আগামী ২৩ এপ্রিল। মুলায়ম ও মায়াবতীর মঞ্চভাগ বিজেপি-বিরোধী শক্তিকে আরো শক্তিশালী করবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।