শুরুতেই বিতর্কের মুখে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়, 14 টি বিষয় থাকলেও বাদ আরবি

আসিফ রনি,নতুন গতি,বহরমপুর : মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা ও সাহিত্য চালু করার দাবিতে উপাচার্য মহাশয়ার সাথে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপি প্রদান করলেন অধ্যাপক ড. মহম্মদ সাইদুর রহমান সহ জেলার অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

    প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার দীর্ঘ বছর পরেও রাজ্যের সবচাইতে সংখ্যালঘু জনসংখ্যা বিশিষ্ট জেলা মুর্শিদাবাদে ছিলনা কোন ইউনিভার্সিটি। আর এই নিয়ে দাবি উঠছিল দীর্ঘদিন ধরে, হয়েছে দীর্ঘ আন্দোলন। ২০১৮ সালে সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে সায় দেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে মুর্শিদাবাদ জেলায় রাজ্য সরকার নিয়ন্ত্রিত বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন আপাতত বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজে শুরু হল। চলতি বছর স্নাতকোত্তর বিভাগের পাঠক্রম চালুর নোটিশ প্রকাশ করা হয়েছে উচ্চ শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে।

    জানা গেছে, মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২২ বর্ষে মোট ১৪টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পঠনপাঠন করার সার্কুলার জারি করা হয়েছে। তবে, সেই ১৪টি বিষয়য়ের তালিকায় বাংলা, ইংরেজি, বিজ্ঞান বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃত স্থান পেলেও স্থান পায়নি আরবি ভাষা ও সাহিত্য সহ উর্দুর মত বিষয়।
    একই সঙ্গে এতগুলো বিষয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়ার সুযোগ থাকলেও সংখ্যালঘুপ্রধান এই জেলায় আরবি বা উর্দু বিষয়ে পড়ার সুযোগ না থাকায় সংখ্যালঘু মহল থেকে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পার্শ্ববর্তী জেলা মালদার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন আরবিতে স্নাতকোত্তর পড়ার সুযোগ রয়েছে তেমনি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দুতে স্নাতকোত্তর করা সুযোগ রয়েছে। কিন্তু মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই সুযোগ নেই।।

    চলতি বর্ষে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা ও সাহিত্য চালু করার দাবিতে অধ্যাপক ড. মহম্মদ সাইদুর রহমান (আরবি বিভাগীয় প্রধান, লাললোলা কলেজ, সদস্য বোর্ড অফ স্টাডিজ এবং হেড ইগজামিনার, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ) র নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপিকা সুজাতা বাগচি ব্যানার্জি মহাশয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং এই মর্মে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন ।

    তাতে উনি আশ্বাস দেন যে এই প্রোপজাল উচ্চ শিক্ষা দফতর কে খুব শীঘ্রই পাঠাবেন,প্রয়োজনে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন যাতে করে এই শিক্ষা বর্ষেই (২০২১-২০২২) পঠন পাঠনের কাজ শুরু করা যায়। তিনি আরো বলেন মুর্শিদাবাদ একটি সাংস্কৃতিক পূর্ণ ঐতিহ্যবাহী জেলা । সেহেতু এখানে ইসলামিক স্টাডিজ,থেওলজি পার্শিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ সহ এশিয়ার অন্যান্য ল্যাঙ্গুয়েজ গুলোও যুক্ত করার চিন্তাভাবনা আছে আগামীতে।

    প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটির আধিকারিকগন এবং জেলার বিভিন্ন কলেজ থেকে আগত অধ্যাপকগন।উল্লেখযোগ্য ড. জিয়াউল হক ( বিভাগীয় প্রধান, ডি এন সি কলেজ, ওরাংগাবাদ) অধ্যাপক মেহবুব আলম সহ অনেকেই।

    অপরদিকে এই দাবি নিয়েই শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. বদিউর রহমান, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সায়িদুর রহমান, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মেহেদী হাসান সহ বিশিষ্টজনেরা।