নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় তৃণমূল পরিচালিত বিলকুমারী পঞ্চায়েত কার্যালয়ে মধ্যরাতে মদের আসর!

নিজস্ব সংবাদদাতা : নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় তৃণমূল পরিচালিত বিলকুমারী পঞ্চায়েত কার্যালয়ে মধ্যরাতে মদের আসর! প্রধানের চেয়ারে আসরের মধ্যমণি হয়ে বসে রয়েছেন তাঁর স্বামী। এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় এলাকা। পঞ্চায়েত কার্যালয়ে তালা মেরে দেয় বিজেপি। অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে তারা। তদন্ত করে ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

     

    একশো দিনের কাজের প্রকল্পে খাতায়কলমে পুকুর তৈরি করা হয়েছে। তার টাকাও উঠে গিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেই পুকুরেরই কোনও অস্তিত্ব নেই। বিলকুমারী পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে এমন পুকুরচুরির অভিযোগ ঘিরেই উত্তপ্ত নাকাশিপাড়া। বিরোধীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার সরেজমিনে পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল জেলাশাসকের কার্যালয়ের। অভিযোগ, মঙ্গলবার গভীর রাতে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে আলো জ্বলতে দেখে সন্দেহ হয় গ্রামবাসীদের। কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রধানের ঘরে মদের আসর বসিয়েছেন প্রধানের স্বামী। সঙ্গে পঞ্চায়েতের কয়েক জন অস্থায়ী কর্মী।

     

    বিজেপির অভিযোগ, জেলাশাসকের প্রতিনিধিরা গ্রামে পৌঁছনোর আগেই রাতের অন্ধকারে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল লোপাট করাই ছিল উদ্দেশ্য। যাতে দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়া যায়। কিন্তু হাতেনাতে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। এর পরই পঞ্চায়েত কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। পর দিন সকালে লিখিত অভিযোগ জানানো হয় অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং বিডিওর কাছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে প্রশাসনের তরফে, দাবি বিজেপির।স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান অর্পিতা বর্মণ বলেন, ‘‘আমি জানি না কেন আমার স্বামী অত রাতে পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েছিল।’’ অভিযুক্ত প্রদ্যোৎ বর্মণ বলেন, ‘‘কিছু নির্মাণের কাজ নিয়ে কথা বলতে ঠিকাদার ফোন করে আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। তাই গিয়েছিলাম।’’ স্ত্রীর কার্যালয়ে মদের আসর বসানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে কিছু বলব না।’’

     

    বিজেপি এ নিয়ে তুমুল আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূলের দিকে। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘তোলাবাজি ও উচ্ছৃঙ্খলতাই ওদের আসল সংস্কৃতি। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, বেশির ভাগ তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতেই নিয়মিত মদের আসর বসে। আর সেই আসরের ব্যান্ডমাস্টাররা সকলেই তৃণমূলের হোমরাচোমরা।’’ এ প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি কল্লোল খাঁ বলেন, ‘‘আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। খোঁজ নেব। প্রধানের স্বামীর তো ওখানে যাওয়ারই কথা নয়, মদ খাওয়া তো দূর অস্ত্‌। আইন আইনের পথে চলবে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, ‘‘তৃণমূল যে সংস্কৃতির আমদানি করেছে তা সংক্রমণের মতো গোটা দেহে ছড়িয়ে পড়েছে। এটা থেকে বেরোনোর কোনও রাস্তা তৃণমূলের কাছে নেই। সরকার দুষ্কৃতীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, বলা ভাল, রাজ্যে দুষ্কৃতীদেরই সরকার চলছে।’’