|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর: অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতে মহীরূপ পতন ঘটালো। মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রয়াত হলেন অবিভক্ত মেদিনীপুরের বরণীয় সাহিত্যিক , দুই বাংলায় বিশিষ্ট নজরুল-বিশেষজ্ঞ হিসাবে স্বীকৃত ও পুরস্কৃত বিশিষ্ট সাহিত্যিক আজহারউদ্দিন খান।মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯১বছর। কয়েকবছর ধরে প্রস্টেট ক্যানসার ও বার্ধক্যজনিত জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। মঙ্গলবার রাতে মেদিনীপুর শহরের বড়আস্তানার নিজ বাসভবনে প্রয়াত হন। আজহারউদ্দিন খান ১৯৩০ সালের ১লা জানুয়ারি মেদিনীপুর শহরের মীরবাজারে জন্মগ্রহণ করেন। পেশায় ছিলেন গ্রন্থাগারিক। দীর্ঘ দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘের রাজ্য নেতৃত্ব ছিলেন। আমৃত্যু ছিলেন লেখক শিল্পী সংঘের রাজ্য কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য। অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘের শাখা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। ছিলেন সংগঠনের অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার সভাপতি। আমৃত্যু পশ্চিমবঙ্গ লেখক শিল্পী সংঘের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। লিখেছেন অনেক পুস্তক। পেশায় গ্রন্থাগারিক হলেও নেশায় ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক, সাহিত্য সমালোচক ও একনিষ্ঠ সংগঠক । তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হলো বাংলা সাহিত্যে নজরুল , বাংলা সাহিত্যে মোহিতলাল , বাংলা সাহিত্যে মহম্মদ শহীদুল্লাহ ,বাংলা সাহিত্যে মহম্মদ আব্দুল হাই ,রক্তে রাঙ্গানো দিন , দীপ্ত আলোর বন্যা ,বঙ্কিমচন্দ্র : অন্য ভাবনায় প্রভৃতি। তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থগুলি হলো “শেকড়ের খোঁজে”, বিদ্যাসাগর স্মরাক গ্রন্থ , মোহিতলালের পত্র গুচ্ছ ইত্যাদি। বুধবার সকালে তাঁর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার সাহিত্য সংস্কৃতি জগৎ তথা বিভিন্ন মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকেই সকালে তাঁর বাড়িতে গিয়ে শোকজ্ঞাপন করেন তেমনি অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকজ্ঞাপন করেন। শোক প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিশিষ্ট সাহিত্যিক বিপ্লব মাজী, গনতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘের রাজ্য নেতৃত্ব তথা সমাজসেবী,বিজয় পাল, বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক তথা রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিবেকানন্দ চক্রবর্তী, প্রাক্তন স্বাস্থ্যকর্তা ও সাহিত্যিক বিমল গুড়িয়া, বর্ষীয়ান কবি নিলয় মিত্র, বিশিষ্ট লোক সংস্কৃতি গবেষক তথা প্রাক্তন শিক্ষাকর্তা মধুপ দে, লেখিকা ও সমাজকর্মী রোশেনারা খান, সাহিত্যিক প্রদীপ দেব বর্মন, সাহিত্যিক বিদ্যুৎ পাল, লেখক শিল্পী সংঘের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মহম্মদ কামারুজ্জামান,অধ্যাপক অনিল জানা,অধ্যাপিকা অপর্ণীতা ভট্টাচার্য, জেলা গ্রন্থাগারের প্রাক্তন সম্পাদক বিমান গুপ্ত, বিশিষ্ট গবেষক ও শিক্ষক অমিত সাহু, মেদিনীপুর ডট ইনের কর্ণাধার গবেষক অরিন্দম ভৌমিক, রবীন্দ্র স্মৃতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক লক্ষণ চন্দ্র ওঝা, চিত্রসমালোচক ও কবি সিদ্ধার্থ সাঁতরা,প্রাক্তন ব্যাংককর্মী তথা সংস্কৃতিপ্রেমী ব্যক্তিত্ব স্নেহময় দত্ত ও সুদীপ রায, সংস্কৃতিপ্রেমী তৌফিক হোসেন, প্রাক্তন শিক্ষা কর্মাধক্ষ্য মধুসূদন রায়, সহ আরো অন্যান্য অনেকে। আজহারউদ্দিন খানের প্রয়াণে মেদিনীপুরের সাহিত্য জগতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।