|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা:প্রতারণার কত রকমের ফাঁদ পাততে দেখা যায় প্রতারকদের। মানুষের সহজ সরল ভাব এবং অনেক কিছু না জানার পরিপ্রেক্ষিতে এমন প্রতারণার ঘটনা ঘটে থাকে। তবে এবার বীরভূমে যে ধরনের ঘটনা ঘটল তা নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটছে এলাকার বাসিন্দাদের।
বুধবার সিউড়ি দু’নম্বর ব্লকের অন্তর্গত দমদমা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়াল গ্রামে দু’জন যুবক এসে হাজির হন। তাদের কাছে ছিল একটি POS মেশিন এবং বেশ কিছু এলইডি বাল্ব। তারা গ্রামের বাসিন্দাদের জানান, তাদের আধার নম্বর এবং এই POS মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ দিলে একটি করে এলইডি বাল্ব বিনামূল্যে দেওয়া হবে এবং সার কেনার সময় ভর্তুকি দেওয়া হবে। গ্রামবাসীদের দাবি অনুযায়ী ওই দুই যুবকের কথায় তারা একে একে নিজেদের আধার নম্বর এবং POS মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ দিতে শুরু করেন। অন্যদিকে ওই দুই যুবক একটি ডাইরিতে এক একজন ব্যক্তির নাম ও তাদের পাশে তাদের আধার নম্বর লিখে রাখতে শুরু করেন।এইভাবে বেশ কয়েকজনের নাম এবং আধার নম্বর ও আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার পর হঠাৎ গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সন্দেহ হয় এই বিষয়টি নিয়ে। তারপর তারা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে তাদের মধ্যে নানা অসংগতিপূর্ণ কথাবার্তা শুনতে পাওয়া যায়। ইতিমধ্যে এলাকায় হইচই শুরু হলে ওই দুই যুবক ডাইরি, POS মেশিন এবং এলইডি বাল্বগুলি ছেড়ে চম্পট দেয়।ঘটনার জানাজানি হতে এলাকায় পৌঁছান সিউড়ি দু’নম্বর ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা সুপ্রভাত পাল এবং দমদমা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এহেসান উল হক। তারা বিষয়টি দেখেন এবং এই বিষয়ে তদন্ত করার আশ্বাস দেন। তবে তারাও এই বিষয়টি নিয়ে সন্দেহের মধ্যে রয়েছেন। কেন এইভাবে আধার নম্বর এবং আঙুলের ছাপ নেওয়া হল বা কেন এলইডি বাল্ব বিনামূল্যে দেওয়া হল তাই এখন সন্দেহের মূল কারণ।অন্যদিকে এই ঘটনার পর যারা আধার নম্বর এবং আঙ্গুলের ছাপ দিয়েছিলেন তারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়া হবে না তো এমন সন্দেহে। যদিও ওই দুই যুবক যারা গ্রামে এসেছিলেন তারা তাদের POS মেশিন এবং ডাইরি যেখানে আধার নম্বর নোট করা হচ্ছিল তা ফেলে দিয়ে চলে যাওয়ায় প্রতারণার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ঝুঁকি কম রয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে।অন্যদিকে দমদমা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এহেসান উল হক দাবি করেছেন, এই POS মেশিনটি সুমিত্রা সাহা নামে একজনের। তার নামে সারের ডিলারশিপ রয়েছে। এহেসান উল হক দাবি করেছেন, এইভাবে অসাধু উপায়ে সরকারের থেকে সার কিনে নেন এমন ডিলাররা এবং তা পরে বিক্রি করে থাকেন। এতে সাধারণ চাষীরা সুবিধা না পেলেও ডিলারদের বড় মুনাফা থাকে।