“তৃণমূল কংগ্রেসে কেউ প্যারাশুটে নামেনি, লিফটে ওঠেনি”  সেই প্যারাসুট শব্দই ফিরিয়ে দিলেন সাতগাছিয়া জনসভা থেকে অভিষেক

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: নাম নিলেন না, তবে একটা শব্দেই বুঝিয়ে দিলেন নিশানায় শুভেন্দু অধিকারী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা উল্লেখ না করে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন,’প্যারাশুটে নামিনি, লিফটে উঠিনি।’ সেই ‘প্যারাশুট’ শব্দই ফিরিয়ে দিলেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। সাতগাছিয়ার জনসভায় অভিষেক বলেন,”কর্মী হোক বা নেতা, তৃণমূল কংগ্রেসে কেউ প্যারাশুটে নামেনি। লিফটে ওঠেনি।”

    চলতি মাসেই নন্দীগ্রামে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন,”আমি প্যারাশুটে নামিনি। লিফটেও উঠিনি। সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঠেছি।” শুভেন্দু কারও নাম না করলেও কার কথা বলতে চেয়েছেন তা সহজেই অনুমেয়। মাসের শেষে সাতগাছিয়ায় তার জবাব দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাতারাতি তৈরি হয়নি। একে ওকে দিয়ে মন্তব্য করিয়ে লাভ হবে না। ৩৪ বছরের তমশাচ্ছন্ন পশ্চিমবঙ্গের সূর্য মমতা। লড়াই করতে আসলে ঝলসে যাবেন। তৃণমূল কংগ্রেসে রাতারাতি কেউ নেতা হয়নি। কর্মী হোক বা নেতা- কেউ প্যারাশুটে নামেননি। লিফটেও ওঠেননি। কেউ কেউ অনেক কিছু বলে। গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। আমি সাধুবাদ জানাই। লিফটে উঠলে ৩৫টা পদের অধিকারী হতাম। প্যারাশুটে নামলে দক্ষিণ কলকাতায় লড়তাম, যেখানে আমি থাকি। ২০১৪ সালে প্রার্থী হয়েছি ডায়মন্ড হারবারের।”

    ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ ছিলেন প্রয়াত সৌমেন মিত্র। তাঁর জমানায় কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেন অভিষেক। তাঁর কথায়,”প্রার্থী হওয়ার পর মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়েছি। কেউ বলছে জল নেই, বিদ্যুৎ নেই। তবুও ময়দান ছেড়ে যাইনি। আপনাদের ভালবাসায় ৭১ হাজার ভোটে জিতেছিলাম। সবচেয়ে কম ভোটের মার্জিন এই জেলায়। জেতার পর বুথে বুথে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছি। সেই ডায়মন্ডবারবার গতবার ৭ লক্ষ ৯১ হাজার ভোট পেয়েছি। ৩ লক্ষ ২২ হাজার ভোটে জিতেছি।”

    মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রীর নাম উল্লেখ না করেই বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ করলেন অভিষেক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে দলের নেত্রী তা স্পষ্ট করে দিয়ে অভিষেকের বার্তা,”আপনারা যাঁরা এসেছেন ক’জন প্যারাশুটে নেমেছেন। কজন লিফটে উঠেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নাম তৃণমূল কংগ্রেস। এটা মাথায় রাখতে হবে। দল সকলের কাছে মায়ের মতো। তৃণমূল কংগ্রেস সকলের মা। মায়ের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলে ছেড়ে কথা বলবেন? নিজে উচ্চাকাঙক্ষী হয়ে অন্য দলের হয়ে তাবেদারি তল্পিবাহক হলে ছেড়ে কথা বলবেন? মায়ের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা সহ্য করা যায় না। একটা বাংলা ছবির সংলাপ আছে, বউ হারালে বউ পাওয়া যায়, মা হারালে পাওয়া যায় না। বিশ্বাসঘাতকতা করলে কড়ায়-গণ্ডায় জবাব দেওয়া হবে। যতই নাড়ো কলকাটি নবান্নে আবার হাওয়াই চটি। পদ নয় পতাকা, নেত্রীর নাম মমতা।”